বরিশাল: পিছিয়ে পড়া এক জনপদের নাম

- প্রকাশঃ ০৬:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
- / 18
“প্রাচ্যের ভেনিস” খ্যাত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর বরিশাল। ২০০২ সালে সিটি করপোরেশনের মর্যাদা পেলেও, অন্যান্য মহানগরের তুলনায় বরিশালের অগ্রগতি এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। শিক্ষা খাত ছাড়া প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এ অঞ্চল নিম্নমুখী প্রবণতায় রয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক আদমশুমারি অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র বিভাগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বরিশাল। একসময় ধান উৎপাদনে খ্যাত বরিশাল এখন কৃষিতে আগের সেই গৌরব ধরে রাখতে পারেনি। নেই পর্যাপ্ত শিল্প কারখানা, ফলে তৈরি হয়নি প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানও। ২০২২ সালে বহু প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু চালু হলেও, প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক গ্যাসের অভাবে এখানকার শিল্পায়ন এখনো স্বপ্নই রয়ে গেছে। বড় ধরনের কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি, এমনকি মাঝারি শিল্পও দৃশ্যমান নয়।
ফলে এখানকার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের জন্য কাজের সুযোগ খুবই সীমিত। তারা বাধ্য হয়েই দেশের অন্যান্য অঞ্চলে, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় পাড়ি জমাতে বাধ্য হন। এতে স্থানীয় উন্নয়ন যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি ঢাকার ওপর জনসংখ্যার চাপ বাড়ে।
স্বাস্থ্য খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। হৃদরোগসহ জটিল ও জরুরি চিকিৎসাসেবা এখান থেকে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার জন্য বরিশালবাসীকে রাজধানীমুখী হতে হয়।
এ অবস্থার উত্তরণে বরিশালে দ্রুত শিল্পায়ন জরুরি। ভোলায় আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বরিশালে সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি হতে পারে। এতে করে স্থানীয়ভাবে শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদন খাতেও সমান গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন করতে হবে। তখন বরিশালের মানুষ নিজ এলাকায় থেকে কাজ ও জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতে পারবেন। এতে ঢাকার ওপর চাপও অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বরিশাল প্রতিনিধি: মো. রাইয়ান ইসলাম (তানজীম)