ঢাকা ১০:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবার ফিরছে সাত কলেজের আন্দোলন কর্মসূচি

  • প্রকাশঃ ০২:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • / 72

ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সাতটি সুনামধন্য ক্যাম্পাসকে ঘিরে প্রস্তাবিত “ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি”। ২০১৭ সালে এই ক্যাম্পাসগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। জুলাই-আগস্ট মাসের পর থেকে ক্যাম্পাসগুলো একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নিতে শুরু করে।রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে আগামী সোমবার (১৯ মে) থেকে আবারও রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

“আজ ১৭ মে, শনিবার বিকেল ৪টা ইডেন মহিলা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করতে একটি ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।”

জাফরিন আক্তার বলেন, “আমরা রাজপথে নামতে চাই না, আমরা পড়াশোনায় ফিরেছি। কিন্তু সরকার যদি আগামীকাল রোববারের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি না করে, তবে সোমবার থেকে আমরা বাধ্য হবো মাঠে নামতে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র কাঠামো না থাকায় এখনো সবকিছুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

পরিকল্পনা উপদেষ্টার আশ্বাসের কথা তুলে ধরে তানজিমুল আবিদ বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ও বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তী প্রশাসনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এরপর এটি এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ প্রশাসন ঘোষণা করা হবে বলে মাননীয় পরিকল্পনা উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। স্যার শিক্ষা উপদেষ্টা থাকাকালীন সময় থেকেই যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের দাবি বিবেচনা করে আসছেন। আমরা স্যারের এ আশ্বাসেও ভরসা রাখতে চাই।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সাত কলেজের বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু হয়। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি—ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি, অথচ এখনো আমাদের মৌলিক দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন দ্রুত জারি হোক, যাতে আমরা ঢাবির অধিভুক্তির জটিলতা ছাড়াই স্বতন্ত্রভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি। প্রতিবার শুধু আশ্বাসে সমস্যার সমাধান হয় না, এবার যদি দাবি না মানা হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না।

পরবর্তী কর্মসূচি কেমন হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, সেটা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেব। একই সঙ্গে আমরা বাকি দাবিগুলোর বিষয়েও নজর রাখবো। আমাদের যদি আবার মাঠে নামতে হয়, তাহলে এবার রাজপথ থেকেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরবো।

শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবিসমূহ:

১) আগামীকাল রোববারের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

২) অন্তর্বর্তী প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সেশনজট নিরসনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে ভুতুড়ে ফলের সমাধান, বিভিন্ন ইস্যুতে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধসহ যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো স্পষ্টভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।

৩) অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পরবর্তী ২ কার্যদিবসের মধ্যে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৪) আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা এবং লোগো/মনোগ্রাম প্রকাশ করতে হবে।

৫) আগামী এক মাসের অর্থাৎ আগামী ১৬ জুন, ২০২৫ খ্রি. এর মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেটে নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা

শেয়ার করুন

আবার ফিরছে সাত কলেজের আন্দোলন কর্মসূচি

প্রকাশঃ ০২:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সাতটি সুনামধন্য ক্যাম্পাসকে ঘিরে প্রস্তাবিত “ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি”। ২০১৭ সালে এই ক্যাম্পাসগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। জুলাই-আগস্ট মাসের পর থেকে ক্যাম্পাসগুলো একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নিতে শুরু করে।রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে আগামী সোমবার (১৯ মে) থেকে আবারও রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

“আজ ১৭ মে, শনিবার বিকেল ৪টা ইডেন মহিলা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করতে একটি ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।”

জাফরিন আক্তার বলেন, “আমরা রাজপথে নামতে চাই না, আমরা পড়াশোনায় ফিরেছি। কিন্তু সরকার যদি আগামীকাল রোববারের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি না করে, তবে সোমবার থেকে আমরা বাধ্য হবো মাঠে নামতে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র কাঠামো না থাকায় এখনো সবকিছুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

পরিকল্পনা উপদেষ্টার আশ্বাসের কথা তুলে ধরে তানজিমুল আবিদ বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ও বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তী প্রশাসনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এরপর এটি এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ প্রশাসন ঘোষণা করা হবে বলে মাননীয় পরিকল্পনা উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। স্যার শিক্ষা উপদেষ্টা থাকাকালীন সময় থেকেই যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের দাবি বিবেচনা করে আসছেন। আমরা স্যারের এ আশ্বাসেও ভরসা রাখতে চাই।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সাত কলেজের বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু হয়। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি—ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি, অথচ এখনো আমাদের মৌলিক দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন দ্রুত জারি হোক, যাতে আমরা ঢাবির অধিভুক্তির জটিলতা ছাড়াই স্বতন্ত্রভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি। প্রতিবার শুধু আশ্বাসে সমস্যার সমাধান হয় না, এবার যদি দাবি না মানা হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না।

পরবর্তী কর্মসূচি কেমন হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, সেটা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেব। একই সঙ্গে আমরা বাকি দাবিগুলোর বিষয়েও নজর রাখবো। আমাদের যদি আবার মাঠে নামতে হয়, তাহলে এবার রাজপথ থেকেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরবো।

শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবিসমূহ:

১) আগামীকাল রোববারের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

২) অন্তর্বর্তী প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সেশনজট নিরসনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে ভুতুড়ে ফলের সমাধান, বিভিন্ন ইস্যুতে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধসহ যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো স্পষ্টভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।

৩) অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পরবর্তী ২ কার্যদিবসের মধ্যে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৪) আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা এবং লোগো/মনোগ্রাম প্রকাশ করতে হবে।

৫) আগামী এক মাসের অর্থাৎ আগামী ১৬ জুন, ২০২৫ খ্রি. এর মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেটে নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা