জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাশ্রমের আয়োজনে দুঃশাসন ও গনঅভুত্থান বিষয়ক বইয়ের শীর্ষক পাঠ অনুষ্ঠিত

- প্রকাশঃ ০৩:২৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
- / 77
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাশ্রম এর আয়োজনে দুঃশাসন ও গনঅভুত্থান বিষয়ক ” একটি বিষন্ন রাইফেল” শীর্ষক উপন্যাস এর ওপর আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৭ ই মে) বিকাল ৪ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের দর্শন বিভাগের ১০৩ নং কক্ষে আমন্ত্রিত আলোচক ও লেখক -পাঠক দের উপস্থিতিতে রায়হান রাইন এর লেখা “একটি বিষন্ন বিকেল” বইয়ের ওপর এ প্রোগ্রাম আয়োজিত হয়।
লেখক -পাঠক আলাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন “একটি বিষন্ন রাইফেল ” শীর্ষক উপন্যাসের লেখক রায়হান রাইন।আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.শাহমান মৈশান, বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক মহিউদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী এ.এম হাবিব উসমান। এছাড়াও লেখক,পাঠক সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
কথা সাহিত্যিক মহিউদ্দিন আহমেদ তার আলোচনায় বলেন,”গল্প কখনো মিথ্যা হয়না, গল্পের জগতে গল্প সত্য।আমরা দেখব রায়হান রাইন এর লেখা উপন্যাসে যে গল্প
তা স্বাধীনতা পরবর্তী একটি দেশের চিত্র তুলে ধরে।আমার জানামতে এ উপন্যাসটি গনঅভুত্থান এর অনেক আগে থেকে লেখা শুরু হয়েছে। এই উপন্যাস পড়তে গিয়ে আমি বারবার অভিহিত হয়েছি যে তিনি কিভাবে উপন্যাসটির মধ্যে বাস্তবিক আবু সাঈদ কে তুলে ধরেছেন।বাস্তব থেকে উপাদান নিয়ে সে উপন্যাসটি মুলত সাজিয়েছে। ৫ ই আগস্টের পরে উপন্যাসের যে অংশগুলো লেখা হয়েছে সেখানে একটু ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়েছে।সেই অংশে বাস্তবের অবয়বে গল্প তৈরী করেছেন তিনি। এ উপন্যাসটি পড়ার জন্য আমি মনে করি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। উপন্যাসের শাফায়েত এর চরিত্র আমি মনে করি লেখক রায়হান রাইন কেই ধারন করে”
উপন্যাস সম্পর্কে অধ্যাপক ড.শাহমান মৈশান বলেন”
আমি কলেজ জীবন থেকেই রায়হান রাইন এর লেখা পড়ছি। আমার সাথে জাহাঙ্গীরনগরে লেখক এর সাথে আজ প্রথম সাক্ষাৎ। আমি উপন্যাসটিকে উপলব্ধি করে আমার মধ্যে যে অনুভূতি যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে আমি তা প্রকাশ করছি। এই উপন্যাসটি অমাকে একরকম আক্রান্ত করেছে। এটি নিজেই নিজেকে ব্যাখা করে এটি সেই ধর্মী একটি উপন্যাস।এই উপন্যাসের মধ্যে দুঃশাসন,পরাজয়, গুম,দ্রোহ ও এক আত্নের কাহিনি ব্যাক্ত হয়েছে ।এটা একটি সেল্ফ এর কাহিনি। আমাদের কল্পভুবন আমি মনে করি বাস্তব জীবনের চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে যা এই উপন্যাসের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। আমি মনে এটা একটি কালজয়ী উপন্যাস।এবং যখন কোনো লেখা কালকে অতিক্রম করে যায় তখন তা নিয়ে আলোচনা করা যায়।এটি একটি ডাবল ফিকশন স্বরুপ উপন্যাস।এটা কী একটি রাজনৈতিক উপন্যাস?
এই উপন্যাসটি আমাদের রাজনৈতিক সচেতনতা এনে দেয়।আমি মনে করি এই উপন্যাসটি অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যত কে ছাড়িয়ে গিয়েছে। “একটি বিষন্ন রাইফেল “একটি গন অভুত্থানের গল্প যার সাথে হেমলেট এর একটি বিশেষ মিল রয়েছে।”
লেখক রায়হান রাইন তার বইতে উল্লেখ করেন” একটি রাইফেল বিষণ্ণ হয়ে উঠলে সে কি আর গুলি করতে জানে? এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি মিলবে না এই উপন্যাসে। কিন্তু একাত্তরের একটা রাইফেল কোনো গুলি না ছুঁড়েও কী করে বহু বছর পরের এক গণঅভ্যুত্থানে কাজে লাগতে পারে, সেই গল্পের মনোমুগ্ধকর ছবিই কি রায়হান রাইন এঁকেছেন এই উপন্যাসে? রাইফেলটি পাঁচ দশকেরও বেশি পুরনো। অথচ একাত্তরের বহু পর জন্মানো শাফায়েত যখন রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক গুমের শিকার হয়ে ভয়াবহ নির্যাতনের মুখে; তখন একজন মুক্তিযোদ্ধা, যাকে সে কখনো দেখেনি, তাঁর সঙ্গ আর অকুতোভয় মনোবল শাফায়েতকে যন্ত্রণা সইবার শক্তি জোগায় ঠিকই। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও বাকস্বাধীনতাহীনতা, গুম, খুনের উর্বর জমিনে আপোষহীন লড়ে যাওয়ার রূপকময় গল্প ‘একটি বিষণ্ণ রাইফেল।’ পারিজাত, কৃষ্ণচুড়া আর গগনশিরীষের গল্প ‘একটি বিষণ্ণ রাইফেল”
উল্লেখ্য ” একটি বিষন্ন রাইফেল ” উপন্যাসের লেখক রায়হান রাইন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ এর শিক্ষক হিসেবে অধ্যাপনা করছেন।
প্রতিবেদক:আমির ফয়সাল
সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা