ক্যামেরার লেন্সে স্বপ্ন বুনছেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রাবণ

- প্রকাশঃ ১১:৪৬:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
- / 10
ইশতিয়াকের ভাষায় ছবি তুলে গল্প বলার এই ক্ষমতাই তাকে সবচেয়ে বেশি টানে । ছবি: ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ
ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ। ২০১৯ সালে একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন হাতে নিয়ে তার ফটোগ্রাফির যাত্রা শুরু। তখনো ভালো করে জানতেন না, একটি ছবি কতটা শক্তিশালী হতে পারে। করোনাকালে ঘরবন্দি জীবনে ছবিই হয়ে ওঠে তার নেশা। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন অনলাইন ফটোগ্রাফি গ্রুপে যুক্ত হন, পরিচিত হন স্বনামধন্য আলোকচিত্রীদের সঙ্গে, আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় নতুন স্বপ্ন।
ইশতিয়াকের ভাষায়, “যা মুখে বলা যায় না, তা ছবির মাধ্যমে বলা সম্ভব। শক্তিশালী একটি ছবি কখনো শব্দের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, মানুষের আবেগ স্পর্শ করে, এমনকি সামাজিক পরিবর্তনের কথাও বলে।” ছবি তুলে গল্প বলার এই ক্ষমতাই তাকে সবচেয়ে বেশি টানে।
ছবি: ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ
মানুষ আর জনজীবনের ছবি তুলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তিনি। তার মতে, একেকটি মুখচ্ছবি হাজারো গল্পের বাহক। খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রাম আর ঘাম-ঝরা পরিশ্রমকে ছবিতে তুলে ধরাই তার অন্যতম লক্ষ্য।
এখন তার হাতে একাধিক প্রজেক্ট চলছে। এর মধ্যে “Fatigue Sleep” প্রজেক্টে তিনি সদরঘাট থেকে ফুটপাত—যেখানে ক্লান্ত মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, সেসব দৃশ্য ধরে রাখতে চান ক্যামেরায়। মানুষের জীবনের কঠিন বাস্তবতাই ফুটে উঠবে তার ফ্রেমে।
ছবি: ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ
শুধু স্থিরচিত্র নয়, ডকুমেন্টারি আর ট্রাভেল ফটোগ্রাফিতেও সমান আগ্রহ শ্রাবণের। বলেন, সবই করেছি একক প্রচেষ্টায়। কোনো সহযোগিতা পাইনি, শুধু নিজের ভালোবাসা আর পরিশ্রম দিয়ে এগিয়ে গেছি।
বর্তমানে তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে পড়ছেন। এখানকার পড়াশোনা ও শিক্ষকেরা তাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন—ছবির পেছনের গল্প, এর সম্ভাবনা আর কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতন করছেন প্রতিনিয়ত
ছবি: ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ
ইতোমধ্যেই তার কাজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর বিজয়ী, এক্সপ্লোর ফটোগ্রাফি বাংলাদেশ ২০২২-এর প্রথম রানারআপ, সিয়েনা ফটো অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪ ও হিপা মাসিক ছবির প্রতিযোগিতায় ফাইনালিস্ট হয়েছেন। তার ছবি জায়গা করে নিয়েছে CCTV Asia Pacific, CRI Bangla, KP.ru, এমনকি ফ্রান্সের VSD ম্যাগাজিনেও।
ইশতিয়াক মনে করেন, ক্যামেরার লেন্স আমার জীবনের আরেকটি চোখ—এই চোখ দিয়ে আমি গল্প বলি, যা মানুষের মন ছুঁয়ে যায়, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে।