ঢাকা ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

প্রজন্ম কথা ডেস্ক
  • প্রকাশঃ ০৪:৩৮:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / 8

ছবি: সংগৃহীত তথ্যসূত্র: বিবিসি আই ও বিবিসি বাংলা


বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন বলে ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি আই এবং মানবাধিকারভিত্তিক অডিও ফরেনসিক সংস্থা ইয়ারশট এ রেকর্ডিং যাচাই করেছে।

ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, অজ্ঞাতপরিচয় এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে কথোপকথনে শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন, ‘তাঁরা যেখানেই আন্দোলনকারীদের পাবেন, গুলি করবেন।’

সূত্র জানায়, এই কথোপকথন ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই গণভবন থেকে করা হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে অডিওটি প্রথম ফাঁস হয়। বিক্ষোভ চলাকালে ও পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার কলের বিভিন্ন ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লেও এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইয়ারশটের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রেকর্ডিংটি কোনো এডিট বা কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। তাঁরা কণ্ঠস্বরের ছন্দ, স্বর, শ্বাসের শব্দ, ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ ও ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ইএনএফ) বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছেন যে অডিওটি আসল এবং এতে কোনো ধরনের হেরফের হয়নি।

বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও রেকর্ডিংয়ে থাকা কণ্ঠস্বরের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠের মিল পেয়েছে বলে জানিয়েছে।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, সঠিকভাবে যাচাই করা এবং অন্যান্য প্রমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

টবি ক্যাডম্যান বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে শেখ হাসিনাসহ সরকারের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছে, যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও আদালতে বিচার চলছে।

তবে আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ফাঁস হওয়া টেপটির সত্যতা তাঁরা নিশ্চিত করতে পারছেন না এবং এতে বেআইনি কোনো উদ্দেশ্যও দেখছেন না।

ইয়ারশটের ভাষ্য অনুযায়ী, রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন কোনো ঘরে ধারণ করা হয়েছিল যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে শোনা যাচ্ছিল, ফলে রেকর্ডিংয়ে স্পষ্ট টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

প্রকাশঃ ০৪:৩৮:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত তথ্যসূত্র: বিবিসি আই ও বিবিসি বাংলা


বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন বলে ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি আই এবং মানবাধিকারভিত্তিক অডিও ফরেনসিক সংস্থা ইয়ারশট এ রেকর্ডিং যাচাই করেছে।

ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, অজ্ঞাতপরিচয় এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে কথোপকথনে শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন, ‘তাঁরা যেখানেই আন্দোলনকারীদের পাবেন, গুলি করবেন।’

সূত্র জানায়, এই কথোপকথন ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই গণভবন থেকে করা হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে অডিওটি প্রথম ফাঁস হয়। বিক্ষোভ চলাকালে ও পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার কলের বিভিন্ন ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লেও এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইয়ারশটের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রেকর্ডিংটি কোনো এডিট বা কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। তাঁরা কণ্ঠস্বরের ছন্দ, স্বর, শ্বাসের শব্দ, ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ ও ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ইএনএফ) বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছেন যে অডিওটি আসল এবং এতে কোনো ধরনের হেরফের হয়নি।

বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও রেকর্ডিংয়ে থাকা কণ্ঠস্বরের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠের মিল পেয়েছে বলে জানিয়েছে।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, সঠিকভাবে যাচাই করা এবং অন্যান্য প্রমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

টবি ক্যাডম্যান বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে শেখ হাসিনাসহ সরকারের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছে, যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও আদালতে বিচার চলছে।

তবে আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ফাঁস হওয়া টেপটির সত্যতা তাঁরা নিশ্চিত করতে পারছেন না এবং এতে বেআইনি কোনো উদ্দেশ্যও দেখছেন না।

ইয়ারশটের ভাষ্য অনুযায়ী, রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন কোনো ঘরে ধারণ করা হয়েছিল যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে শোনা যাচ্ছিল, ফলে রেকর্ডিংয়ে স্পষ্ট টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”