২১ মাসে গাজায় মৃত্যু ছাড়াল ৫৮ হাজার

- প্রকাশঃ ১২:২৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / 3
ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহের পাশে স্বজনদের আহাজারি | ছবি: আল জাজিরা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ২১ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলায় মৃত্যু ৫৮ হাজার ছাড়িয়েছে। থমকে আছে যুদ্ধবিরতির আলোচনাও। এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আজও গাজার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৮ জন ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৫৮ হাজার ২৬ জন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ।
সোমবার গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালের সামনে নিহতদের মরদেহের পাশে স্বজনদের আহাজারি ছড়িয়ে পড়ে। আজও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান উত্তর গাজার আল–তুফা, আল–সাবরা, আল–সাফতায়ি, মধ্য গাজার নুসেইরাস শরণার্থী শিবির এবং পূর্ব গাজার সুজাইয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালায়। সর্বশেষ খবরে সবচেয়ে বেশি ১৭ জন নিহত হয়েছেন গাজা নগরীসহ উত্তরাঞ্চলে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ‘বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের’ স্থাপনাকে লক্ষ্য করে শতাধিক হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘাতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৩৬০ জনের বেশি চিকিৎসাকর্মীকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে চিকিৎসকও রয়েছেন।
দীর্ঘ সংঘাতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনাও অনিশ্চয়তায় পড়েছে। একে অপরকে দোষারোপ করছে হামাস ও ইসরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আলোচনা চলছে, আশা করছি আগামী সপ্তাহে অগ্রগতি হবে।
গত ৬ জুলাই কাতারের দোহায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। দুই পক্ষ ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির আভাস দিলেও হামাস গাজা থেকে পুরোপুরি ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের শর্ত দিয়েছে। বিপরীতে ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনায় উপত্যকার ৪০ শতাংশ এলাকায় সেনা মোতায়েনের বিষয়টি থাকায় আলোচনা থমকে গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘মানবিক শহর’ গড়ার পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ ও এহুদ ওলমার্ট। তাঁরা একে সরাসরি ‘বন্দিশিবির’ আখ্যা দিয়েছেন।
ইয়ার লাপিদ ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম আর্মি রেডিওকে বলেন, যাকে মানবিক শহর বলা হচ্ছে, আসলে তা বন্দিশিবিরই। সেখান থেকে যদি কেউ বের হতে না পারে, তাহলে সেটি আর কিছুই নয়। ইসরায়েলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে ৬ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিকে সেখানে রাখা হবে। পর্যায়ক্রমে গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষকে এই ‘মানবিক শহর’-এ স্থানান্তরিত করার লক্ষ্য রয়েছে।
এদিকে সোমবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং এর দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের শীর্ষ কূটনীতিকেরা যোগ দেবেন। সেখানে শান্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ পরিবেশ ও উন্নয়ন নিয়ে নতুন সনদ চূড়ান্ত হতে পারে।