কুবিতে র্যাগিংয়ে বহিষ্কৃতদের পক্ষে মানববন্ধন, সাংবাদিকদের হুমকি

- প্রকাশঃ ০৪:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
- / 5
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আব্দুল কাইয়ুম গোলচত্বরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় | ছবি: প্রজন্ম কথা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) র্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত ১২ শিক্ষার্থীর শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম আবর্তনের কিছু শিক্ষার্থী। তবে কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ, গালিগালাজ ও শারীরিক হুমকির অভিযোগ উঠেছে আয়োজকদের বিরুদ্ধে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমাজের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আব্দুল কাইয়ুম গোলচত্বরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন অনুষদের ব্যানার ব্যবহার করা হলেও সেসব অনুষদের ছাত্রদের উপস্থিতি ছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা “তুমি কে, আমি কে আঠারো, আঠারো”, “আঠারো কেন মর্গে, বাকিরা কেন স্বর্গে”, “বাতিল চাই, বহিষ্কার বাতিল চাই” প্রভৃতি স্লোগান দিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন আয়োজক শিক্ষার্থীরা। গণিত বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাদিম রাহুল ও বাংলা বিভাগের মো. ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে ‘তুই-তোকারি’, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং শারীরিক হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
এমসিজে নিউজের রিপোর্টার নিলয় সরকার বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তারা আমাদের উদ্দেশ্যে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেন এবং মারতে তেড়ে আসেন। এটি আমাদের পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক আকাশ আল মামুন বলেন, দায়িত্বরত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করে নাদিম ও ইউনুস। ইউনুস এসে বলেন, ‘বালপাকনামি করতে আসছ? তুই কে?’ এরপর মারতে আসে।
দ্য ঢাকা ডায়েরির প্রতিনিধি নুরুল হাকিম বাপ্পি বলেন, আমি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তখনও সাংবাদিকদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। আমাদের সিনিয়র সাংবাদিকদেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ইউনুস আলী বলেন, আমি সেখানে ছিলাম সহপাঠীদের সহায়তার জন্য। সাংবাদিকদের গালি দিইনি। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব জামান বলেন, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের ব্যাচকে একপাক্ষিকভাবে দোষারোপ করা হয়েছে। যদিও একজন ছাত্র ডায়ালাইসিস রোগী ছিলেন, আমরা তা জানতাম না। তবে বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনার অনুরোধ করছি।
সাংবাদিকদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল, আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমা প্রার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১৭ জুলাই মার্কেটিং বিভাগের ৭ জন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫ জন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে বহিষ্কৃতদের স্থায়ীভাবে আবাসিক হলে অবস্থান নিষিদ্ধ করা হয়।