অবকাঠামো, পরিবহন ও জমি সমস্যার প্রতিবাদে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছে ববিয়ানরা

- প্রকাশঃ ১০:২২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
- / 10
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা অবকাঠামোগত দুরবস্থা, পরিবহন সংকট ও জমি অধিগ্রহণসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনুষ্ঠিত এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত নেন।
ঘোষিত তিন দফা দাবি হলো:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন (হল, একাডেমিক বিল্ডিং, অডিটোরিয়াম) নিশ্চিত করা।
২. জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন বৃদ্ধি করা।
৩. নিরাপদ ও পর্যাপ্ত পরিবহন পুল নিশ্চিত করা।
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চশিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার শিকার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচ চালু রয়েছে। এরই মধ্যে ৮টি ব্যাচ স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছে এবং প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী ২৫টি বিভাগে অধ্যয়নরত। কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ৩৬টি শ্রেণিকক্ষ, ফলে শিক্ষকদের অনেক সময় তালতলাসহ ভবনের বাহিরে ক্লাস নিতে হয়।
শুধু শ্রেণিকক্ষ সংকটই নয়, শিক্ষক সংকটও প্রকট। ২৫টি বিভাগের জন্য যেখানে ৪৯৩ জন শিক্ষকের প্রয়োজন, সেখানে ইউজিসির অনুমোদন রয়েছে মাত্র ২৬৬ জনের। এর মধ্য থেকেও প্রায় ২৫% শিক্ষক উচ্চশিক্ষার জন্য ছুটিতে। বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ২১০ জন, যা প্রয়োজনের ৪২.৬%।
কেন্দ্রীয় পাঠাগারেও স্থান সংকট প্রকট। প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে রিডিং রুমে রয়েছে মাত্র ১৫০টি সিট। এমনকি আবাসনের ক্ষেত্রেও রয়েছে চরম সংকট—মাত্র ৪টি আবাসিক হল, যার আসন সংখ্যা প্রায় ২ হাজার।
পরিবহন সংকটও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস মাত্র ৯টি, আর বিআরটিসির ভাড়াকৃত বাস রয়েছে ১০টি, যা মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় একেবারেই অপর্যাপ্ত।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অব্যবস্থার মূল কারণ বাজেট ও সরকারের সুনজরের অভাব। চলতি অর্থবছরে যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পেয়েছে ২,৮৪০ কোটি টাকা, সেখানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পায়নি কোনো বরাদ্দই।
শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন থাকলেও ক্লাসরুম ও অফিস রুমের সংকটে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, সমাজকর্ম বিভাগ বর্তমানে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির এক ফ্লোরে অবস্থান করছে।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নাজুক পরিস্থিতির পরিবর্তনে চাই যথাযথ বাজেট, অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ ও প্রশাসনিক অগ্রাধিকার। তিন দফা দাবির বাস্তবায়নে শিগগিরই কর্মসূচির ঘোষণা আসবে বলেও জানান তারা।