ঢাকা ০৮:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিষাদে ঢেকে থাকা ক্যাম্পাসে ফিরে শিক্ষার্থীরা: ১২ দিন পর খুলল মাইলস্টোন স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ০৩:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / 4

যেখানে দুই সপ্তাহ আগেও ছিল প্রাণচাঞ্চল্য, শিক্ষার্থীদের কোলাহল সেই ক্যাম্পাসে এখন শোক, স্মরণ ও নীরবতা। ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ১২ দিন পর আজ রোববার খুলেছে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তবে একদিনের জন্যও শুরু হয়নি নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম বা পরীক্ষা।

শুধু স্মরণ আর শোক জানানোর জন্যই যেন খোলা হয়েছিল আজকের দিনটি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এক আবেগঘন স্মরণসভা। কালো ব্যানার, ফুল, মোমবাতি আর নিহতদের ছবি ঘিরে যেন পুরো ক্যাম্পাস ছিল নীরব কান্নায় আচ্ছন্ন।

কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় আবারও এগিয়ে চলার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনুরোধেই ক্যাম্পাস খুলেছি, কাউন্সেলিং সেশনও চালু করা হয়েছে।’

আরেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম জানান, আগামীকালও কোনো ক্লাস হবে না। বুধবার থেকে শুরু হবে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আগামী তিন মাস নিয়মিত কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

সকাল ১০টার পর ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে ক্যাম্পাসে। কারও চোখে ছিল কান্না, কারও মুখে থমথমে নীরবতা। শ্রেণিকক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীরা চুপচাপ বসে থাকে। মিলাদ মাহফিল ও শোকসভায় অংশ নেয় সবাই।

দশম শ্রেণির সামিরা বলে, ‘প্রতিদিন যে ভবনের সামনে দিয়ে হেঁটে ক্লাসে যেতাম, আজ সেখানে শুধুই পোড়া গন্ধ আর শূন্যতা।’ আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানায়, তার পাশের বাসার ছোট ভাই এখনো বার্ন ইউনিটে ভর্তি। ‘এখানে এসে ওর কথা বারবার মনে পড়ছে।’ দ্বাদশ শ্রেণির নওরোজ আফরিন বলেন, ‘কলেজে আসতে ভয় লাগছিল, তাও এলাম। পিচ্চিদের মুখগুলো চোখে ভাসছে। কান্না পাচ্ছে।’

কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানান, সীমিত আকারে ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষার্থীদের ধীরে ধীরে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলছে, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। বিমানবাহিনীর সহায়তায় চালু করা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প, যেখানে শারীরিক ও মানসিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এই দুঃসময়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহানুভূতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

বিষাদে ঢেকে থাকা ক্যাম্পাসে ফিরে শিক্ষার্থীরা: ১২ দিন পর খুলল মাইলস্টোন স্কুল

প্রকাশঃ ০৩:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

যেখানে দুই সপ্তাহ আগেও ছিল প্রাণচাঞ্চল্য, শিক্ষার্থীদের কোলাহল সেই ক্যাম্পাসে এখন শোক, স্মরণ ও নীরবতা। ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ১২ দিন পর আজ রোববার খুলেছে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তবে একদিনের জন্যও শুরু হয়নি নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম বা পরীক্ষা।

শুধু স্মরণ আর শোক জানানোর জন্যই যেন খোলা হয়েছিল আজকের দিনটি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এক আবেগঘন স্মরণসভা। কালো ব্যানার, ফুল, মোমবাতি আর নিহতদের ছবি ঘিরে যেন পুরো ক্যাম্পাস ছিল নীরব কান্নায় আচ্ছন্ন।

কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় আবারও এগিয়ে চলার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনুরোধেই ক্যাম্পাস খুলেছি, কাউন্সেলিং সেশনও চালু করা হয়েছে।’

আরেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম জানান, আগামীকালও কোনো ক্লাস হবে না। বুধবার থেকে শুরু হবে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আগামী তিন মাস নিয়মিত কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

সকাল ১০টার পর ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে ক্যাম্পাসে। কারও চোখে ছিল কান্না, কারও মুখে থমথমে নীরবতা। শ্রেণিকক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীরা চুপচাপ বসে থাকে। মিলাদ মাহফিল ও শোকসভায় অংশ নেয় সবাই।

দশম শ্রেণির সামিরা বলে, ‘প্রতিদিন যে ভবনের সামনে দিয়ে হেঁটে ক্লাসে যেতাম, আজ সেখানে শুধুই পোড়া গন্ধ আর শূন্যতা।’ আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানায়, তার পাশের বাসার ছোট ভাই এখনো বার্ন ইউনিটে ভর্তি। ‘এখানে এসে ওর কথা বারবার মনে পড়ছে।’ দ্বাদশ শ্রেণির নওরোজ আফরিন বলেন, ‘কলেজে আসতে ভয় লাগছিল, তাও এলাম। পিচ্চিদের মুখগুলো চোখে ভাসছে। কান্না পাচ্ছে।’

কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানান, সীমিত আকারে ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষার্থীদের ধীরে ধীরে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলছে, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। বিমানবাহিনীর সহায়তায় চালু করা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প, যেখানে শারীরিক ও মানসিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এই দুঃসময়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহানুভূতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”