তিন দফা দাবির আশ্বাসে সুনামগঞ্জে বাস মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

- প্রকাশঃ ১১:১৫:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
- / 6
তিন দফা দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে সুনামগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের জন্য আহ্বান করা বাস মালিক ও শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি) প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুজাউল কবির বলেন, ‘আমরা তিন দফা দাবি জানিয়েছিলাম। প্রশাসন আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি যেন না হয়, সে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। ফলে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছি।’
এর আগে সকাল থেকেই সুনামগঞ্জে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গমনেচ্ছু যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। সরেজমিনে দেখা যায়, বাসস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা পিকেটিং করায় যাত্রীবাহী বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে। সীমিতসংখ্যক সিএনজি ও মোটরসাইকেল চললেও বেশিরভাগ চালক ও শ্রমিক কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণ করেন।
রবিবার (৩ আগস্ট) সুনামগঞ্জ শহর থেকে সুবিপ্রবির অস্থায়ী ক্যাম্পাস শান্তিগঞ্জে যাওয়ার পথে বাসভাড়া নিয়ে হেল্পারের সঙ্গে কথাকাটাকাটিতে জড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিগঞ্জে একটি বাসে ভাঙচুর চালান ও শ্রমিকদের মারধর করেন বলে অভিযোগ পরিবহন শ্রমিকদের। পরে শ্রমিকদের একটি অংশ বাসস্টেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন, যা প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও কর্মবিরতি চলমান থাকে।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের তিন দফা দাবি ছিল—
১. শিক্ষার্থীদের দ্বারা বাস ভাঙচুর ও শ্রমিক মারধরের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ,
২. দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে কারাবন্দি একজন চালকের জামিন নিশ্চিত করা,
৩. সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক আনোয়ারের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার।
অন্যদিকে, সুবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান জানান, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জয় ও আরিফসহ কয়েকজন হেল্পারের সঙ্গে অর্ধেক ভাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডায় জড়ান। এসময় এক হেল্পার এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেন বলে অভিযোগ। তিনি আরও দাবি করেন, ‘বাসের ওই হেল্পার মাদকাসক্ত অবস্থায় ছিলেন, যা ঘটনার অন্যতম কারণ।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছর জানুয়ারিতেও বাসভাড়া সংক্রান্ত ঘটনায় শিক্ষার্থী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। তখনও সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যস্থতায় এবার পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে যাত্রী, শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের মধ্যে।