‘বাইরের’ অ্যাম্বুলেন্স আটকে নবজাতকের মৃত্যু, অভিযুক্ত চালকেরা পলাতক

- প্রকাশঃ ০৫:৩৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
- / 3

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে শরীয়তপুর জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি ক্লিনিকের সামনে অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখে চালককে মারধর করার ঘটনা ঘটে।ছবি: সংগৃহীত
শরীয়তপুরে ঢাকাগামী একটি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেওয়ায় চিকিৎসা না পেয়ে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া নবজাতক ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদার ও রুমা বেগম দম্পতির সন্তান। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পরই শ্বাসকষ্টসহ জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
শিশুর স্বজনদের অভিযোগ, রাত আটটার দিকে তারা একটি ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা দেন। পথে চৌরঙ্গী মোড়ে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ান তাঁদের গাড়ি আটকে দেন। স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার না করার কারণ দেখিয়ে তিনি চালককে মারধর করেন ও চাবি নিয়ে নেন। আরও কয়েকজন স্থানীয় চালক এতে অংশ নেন। দীর্ঘ তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তির মধ্যেই চিকিৎসা না পেয়ে নবজাতক মারা যায়।
শিশুটির নানি সেফালী বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ, অল্প খরচে ঢাকায় যাওয়ার জন্য ওই অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি। কিন্তু স্থানীয় আরেক চালক বাধা দেয়, বলে বেশি ভাড়া দিয়ে তাদের গাড়িতে যেতে হবে। আমার নাতি চিকিৎসা পায়নি, মারা গেছে। মেয়ের জ্ঞান ফিরলে কীভাবে খবর দেব বুঝতে পারছি না।
ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্সের চালক মোশারফ মিয়া বলেন, “আমি ঢাকা থেকে রোগী নামিয়ে শরীয়তপুরে ছিলাম। শিশুর স্বজনেরা আমার গাড়ি ভাড়া করেন। রওনা দেওয়ার পর সবুজ বাধা দেয়, মারধর করে চাবি নিয়ে নেয়।”
ঘটনার পর সবুজ দেওয়ান ও তাঁর সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শরীয়তপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালক সমিতির সভাপতি আবদুল হাই বলেন, চৌরঙ্গীতে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেওয়ার কথা শুনে বলেছিলাম ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা শোনেনি। কাজটি সঠিক হয়নি।
শিশু বিশেষজ্ঞ খাজা হুমায়ুন কবির বলেন, “বিকেলে নবজাতককে দেখে জটিলতা শনাক্ত করি, ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপরাধ।”
সদর পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।