মাভাবিপ্রবিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৫২ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা

- প্রকাশঃ ০৩:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 14
একাডেমিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় ইসলামী শিবিরের সংস্কার পরিকল্পনা | ছবি: প্রজন্ম কথা
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক কল্যাণে ৫২ দফা সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করেছে।
সংগঠনটির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাহাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনা সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ও গণআন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে মাভাবিপ্রবিকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রতিটি বিভাগকে আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, ফাইনাল পরীক্ষার ফল ৬–৮ সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ, শিক্ষকদের মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু, পরীক্ষায় ইউনিক কোড ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত এবং বিভাগীয় লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই সরবরাহ করতে হবে। পাশাপাশি গবেষণায় পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, শিক্ষাবৃত্তি ও সুদবিহীন শিক্ষাঋণ চালুরও দাবি জানানো হয়েছে।
শিবিরের দাবি, দীর্ঘ দুই যুগ পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদ, আধুনিক অডিটোরিয়াম, খেলার মাঠ, পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরি ও আবাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। দ্রুত এসব অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নতমানের ক্যাফেটেরিয়া, মেডিকেল সেন্টার, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা হোস্টেল নিশ্চিত করার দাবি করা হয়।
প্রস্তাবনায় বিশেষভাবে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন ও প্রতি বছর ৩ আগস্ট ‘বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত দিবস’ পালন করার কথা উল্লেখ করা হয়। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক নেতৃত্ব বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল ছাত্র সংসদ নির্বাচন অবিলম্বে আয়োজনের দাবিও জানায় সংগঠনটি।
এছাড়া প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নিয়োগে যোগ্যতার ভিত্তি নিশ্চিতকরণ, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ, ডিজিটালাইজেশন এবং ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, র্যাগিং ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পুরো ক্যাম্পাসকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার কথাও বলা হয়।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ক্যাম্পাসে ওয়াই-ফাই সুবিধা, পরিবেশবান্ধব আবাসন ব্যবস্থা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালুর প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংস্কার, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও শিক্ষার্থীদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধা বাড়াতে বাসসংখ্যা বৃদ্ধি, সাশ্রয়ী ভাড়ায় শহরমুখী বাস চালু, সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যসম্মত রান্নাঘর প্রতিষ্ঠার কথাও প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
শিবিরের দাবি, ৫২ দফা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে মাভাবিপ্রবি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ও আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উৎকর্ষ, নিরাপত্তা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত হবে।