ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে সুমুদ ফ্লোটিলা, শহিদুল আলমসহ যাত্রীদের আটক

- প্রকাশঃ ০৩:১৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
- / 29
ফিলিস্তিনের গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা | ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে আলমা নামের নেতৃত্বদানকারী জাহাজে ইসরায়েলি সেনারা ওঠার পর সেটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই। একইভাবে আদারা নামের আরেকটি জাহাজে উঠেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময় অধিকারকর্মীদের মোবাইল ফোন পানিতে ফেলে দিতে দেখা গেছে, যদিও তা তারা স্বেচ্ছায় করেছেন নাকি বাধ্য করা হয়েছে—তা স্পষ্ট নয়।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় প্রবেশের পর থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা এই নৌবহরকে ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট জানিয়েছে, আশদোদ বন্দরে প্রায় ৫০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি নৌবাহিনীর এলিট স্পেশাল ফোর্স ইউনিট শায়েতেত-১৩ ফ্লোটিলার জাহাজগুলো দখল করে যাত্রীদের আটক করার পরিকল্পনা করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যাত্রীদের কেউ কেউ ফেরত পাঠানো হলেও অনেককে কারাগারে নেওয়া হতে পারে। কিছু জাহাজকে তীরে টেনে আনা হবে, আর কয়েকটি ডুবিয়ে দেওয়ারও হুমকি রয়েছে। ফলে বহরের প্রায় ৫০০ যাত্রীর জীবন শঙ্কায় রয়েছে।
ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশক বলেছেন, মানবিক এই মিশন সাগরে সরাসরি ইসরায়েলি বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছে। আলমা নৌযানকে তারা দুই দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে।
প্রোগ্রেসিভ ইন্টারন্যাশনালের সহসমন্বয়কারী ডেভিড অ্যাডলার এক চিঠিতে লেখেন, আমি আশঙ্কা করছি এটিই হবে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে আমার শেষ চিঠি। গত রাতে বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি জাহাজ আমাদের ঘিরে আক্রমণ করেছে, ভয় দেখিয়েছে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
আলমা জাহাজের কর্মী থিয়াগো আভিলা জানান, বাধা দেওয়ার সময় জাহাজের ডিভাইসগুলো অচল হয়ে যায়। আরেক যাত্রী লিসি প্রোয়েনকা বলেন, একটি ইসরায়েলি জাহাজ অন্তত ১৫ মিনিট ধরে বহরের চারপাশে চক্কর দিয়েছে। অন্যরা জানিয়েছেন, আলো নিভিয়ে অজ্ঞাত জাহাজও বাধা দিয়েছে।
নৌবহরের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ফরাসি এমপি মাথিল্ডে প্যানোট, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো এবং অস্ট্রেলিয়ার সরকার ফ্লোটিলার নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। পোপ লিও চতুর্দশও বলেছেন, “আশা করি সহিংসতা হবে না, মানুষকে সম্মান করা হবে।”
৩১ আগস্ট স্পেন থেকে যাত্রা করা এই নৌবহরে ছিল ৪৪টি জাহাজ ও প্রায় ৫০০ যাত্রী। তাদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা।
এটি এখন পর্যন্ত গাজার উদ্দেশে সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক মানবিক মিশন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর আগে গত জুন ও জুলাই মাসে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর দুটি প্রচেষ্টা ইসরায়েল আটকে দিয়েছিল।