ঢাকা ০১:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রেমের সংজ্ঞাঃ অন্তরে চিরস্থায়ী প্রশান্তি

গোলাম মোস্তফা
  • প্রকাশঃ ০৬:২২:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
  • / 47

ছবি: সংগৃহীত


প্রেম এমন এক অনুভূতি, যা যুগে যুগে কবি, দার্শনিক, সাধক, আলেম এবং সাধারণ মানুষকে আলোড়িত করেছে। প্রেমের সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায়—মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একে ব্যাখ্যা করেছে। সাধারণভাবে প্রেমকে বলা হয় অন্তরের প্রশান্তি। তবে এটি কেবল একটি প্রাথমিক সংজ্ঞা। প্রকৃত অর্থে প্রেমের সর্বোচ্চ সংজ্ঞা হলো—অন্তরের চিরস্থায়ী প্রশান্তি। কিন্তু দুনিয়ার যেকোনো প্রেম মানুষের হৃদয়ে সাময়িক আনন্দ দিতে পারে, স্থায়ী প্রশান্তি দিতে পারে না। সুতরাং প্রকৃত প্রেম কেবল সেই প্রেমই, যা কখনো শেষ হবে না, কখনো ক্ষণস্থায়ী হবে না, আর তা হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রেম।

দুনিয়ার প্রেম ক্ষণস্থায়ী প্রশান্তিঃ
মানুষ নারী-পুরুষের সম্পর্ক, বাড়ি, গাড়ি, ধন-সম্পদ, খ্যাতি বা সন্তানদের মধ্যে প্রেম খুঁজে বেড়ায়। এগুলো হয়তো ক্ষণিকের জন্য আনন্দ দেয়, কিছুটা প্রশান্তিও আনে, কিন্তু স্থায়ী নয়। কারণ, দুনিয়ার প্রতিটি জিনিসই ক্ষণস্থায়ী।

আমাদের প্রিয়জন একদিন মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের ছেড়ে চলে যায়।

ধন-সম্পদ একদিন ধ্বংস হয়ে যায় বা হাতছাড়া হয়ে যায়।

যৌবন, সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য সময়ের সাথে সাথে ম্লান হয়ে পড়ে।

ফলে দুনিয়ার যেকোনো ভালোবাসা অবশেষে মানুষকে কষ্ট দেয়, অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে। ক্ষণস্থায়ী প্রশান্তি কখনো প্রেমের চূড়ান্ত সংজ্ঞা হতে পারে না।

হযরত মাওলানা রুমি (রহ.)-এর দৃষ্টিতে প্রেমঃ

সুফি সাধক মাওলানা রুমি (রহ.) প্রেম বিষয়ে একটি অমোঘ সত্য বলেছেন, “মরণশীল কাউকে ভালোবেসো না। কেননা সে একদিন মরে যাবে, আর তোমাকে কাঁদতেই হবে। ভালোবাসো সেই সত্ত্বাকে, যিনি চিরঞ্জীব।”
এখানেই মূল শিক্ষা হলো—চিরস্থায়ী প্রেম কেবল মহান আল্লাহর সাথেই সম্ভব। কারণ তিনি একমাত্র সত্তা, যিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন। তাঁর প্রতি ভালোবাসা মানুষকে কখনো দুঃখ দেয় না। বরং আল্লাহর প্রেম মানুষকে সব পরিস্থিতিতে ধৈর্য, আশ্বাস এবং প্রশান্তি প্রদান করে।

আল কুরআনের দৃষ্টিতে প্রেমের মানদণ্ডঃ

কুরআন প্রেমের প্রকৃত মানদণ্ড সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ

“বলুন, যদি তোমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, স্ত্রী-পরিজন, স্বজন, উপার্জিত ধনসম্পদ, মন্দার আশঙ্কায় সঞ্চিত ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পছন্দের আবাসভূমি তোমাদের কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদের চেয়ে বেশি প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা করো—আল্লাহ ফয়সালা নিয়ে আসা পর্যন্ত।”
(সূরা আত-তাওবা: ২৪)

এই আয়াত আমাদের স্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয়—দুনিয়ার কোনো সম্পর্ক, সম্পদ, স্বজন বা সুখ-সুবিধা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রেমের চেয়ে অগ্রাধিকার পাবে না। যে প্রেম মানুষকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, সেটি আসলে প্রেম নয়, বরং ক্ষণস্থায়ী ভ্রম।

দুনিয়ার প্রেমের পরিণতিঃ
মানুষ যখন দুনিয়ার প্রেমকে চিরস্থায়ী ভেবে আঁকড়ে ধরে, তখন একসময় ভেঙে পড়ে।

ক. প্রিয়জন হারালে মানুষ ভেঙে যায়।
খ. ধন হারালে বা অবস্থান হারালে অন্তরে অশান্তি নেমে আসে।
গ. নাম, খ্যাতি বা সৌন্দর্য চলে গেলে হৃদয় শূন্য হয়ে পড়ে।

ফলে বোঝা যায়, দুনিয়ার যেকোনো প্রেমই একসময় মানুষকে হতাশ করে। এ জন্য আল্লাহর প্রেম ছাড়া অন্য কোনো প্রেমকে “চিরস্থায়ী প্রেম” বলা যায় না।

আল্লাহর প্রেম, চিরস্থায়ী প্রশান্তিঃ
আল্লাহর প্রেমই হলো সেই প্রেম, যা মৃত্যুর পরেও টিকে থাকে।

ক. আল্লাহর প্রেম মানুষকে দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য শেখায়।

খ. আল্লাহর প্রেম মানুষকে জগতের মোহ থেকে মুক্ত করে।

গ. আল্লাহর প্রেম মানুষকে চিরন্তন জান্নাতের পথে নিয়ে যায়।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি তিনটি জিনিসের স্বাদ গ্রহণ করেছে, সে ঈমানের মিষ্টতা লাভ করেছে।
(১) আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে সবচেয়ে প্রিয় হওয়া।
(২) মানুষকে কেবল আল্লাহর জন্য ভালোবাসা।
(৩) কুফরে ফিরে যাওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো ঘৃণিত হওয়া।”
(সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

এই হাদিসে আল্লাহ ও রাসূলের প্রেমকেই প্রকৃত প্রশান্তির মূল চাবিকাঠি বলা হয়েছে।

প্রেমের চূড়ান্ত সংজ্ঞাঃ
অতএব, প্রেমের সাধারণ সংজ্ঞা হলো অন্তরের প্রশান্তি, আর চূড়ান্ত সংজ্ঞা হলো অন্তরের চিরস্থায়ী প্রশান্তি। দুনিয়ার প্রেম ক্ষণস্থায়ী—তাই তা প্রকৃত প্রেম নয়। একমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রেমই মানুষকে চিরস্থায়ী প্রশান্তি দিতে পারে। কারণ এই প্রেম কখনো ভাঙে না, শেষ হয় না, ধ্বংস হয় না।

মানুষ তার জীবনে নানা রকম প্রেমের অভিজ্ঞতা অর্জন করে। কিন্তু যদি সে আল্লাহর প্রেম না খুঁজে, তবে জীবনের সব প্রেম একসময় কষ্টে রূপ নেয়। দুনিয়ার সবকিছু ক্ষণস্থায়ী, তাই এর প্রতি অতিরিক্ত প্রেম একসময় অশান্তির কারণ হয়। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রেমই হলো সেই প্রেম, যা মানুষকে প্রকৃত অর্থে শান্তি দেয়—এই দুনিয়াতেও, আর আখিরাতেও।

ইবনে কাসির ও অন্যান্য মুফাসসিররা হাদিস উল্লেখ করেছেনঃ
রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
“আল্লাহ পৃথিবীর জন্য নবীদের দেহ খাওয়া হারাম করেছেন। প্রত্যেক নবী তার কবরস্থলে জীবিত আছেন এবং নামাজ আদায় করেন।”
(আবু দাউদ, হাদিস ১০৪৭; ইবনে মাজাহ ১৬৩৬)

মহান আল্লাহ পাক আরো বলেন:
“নিশ্চয়ই আল্লাহর ওলিদের কোন ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।”
(সূরা ইউনুস: ৬২)
অনেক মুফাসসির বলেন, যারা আল্লাহর সত্যিকার ওলি, (বন্ধু) তাঁরা মৃত্যুর পরেও বরকতময় হায়াত লাভ করেন।

অতএব প্রকৃত প্রেম —অনন্তকাল বহমান থাকা চিরস্থায়ী প্রশান্তি। আর তাই মহান আল্লাহ পাক ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসাই হলো প্রেম (চিরস্থায়ী প্রশান্তি)

-গোলাম মোস্তফা ফিচার্স রাইটার ও কলামিস্ট

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

প্রেমের সংজ্ঞাঃ অন্তরে চিরস্থায়ী প্রশান্তি

প্রকাশঃ ০৬:২২:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত


প্রেম এমন এক অনুভূতি, যা যুগে যুগে কবি, দার্শনিক, সাধক, আলেম এবং সাধারণ মানুষকে আলোড়িত করেছে। প্রেমের সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায়—মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একে ব্যাখ্যা করেছে। সাধারণভাবে প্রেমকে বলা হয় অন্তরের প্রশান্তি। তবে এটি কেবল একটি প্রাথমিক সংজ্ঞা। প্রকৃত অর্থে প্রেমের সর্বোচ্চ সংজ্ঞা হলো—অন্তরের চিরস্থায়ী প্রশান্তি। কিন্তু দুনিয়ার যেকোনো প্রেম মানুষের হৃদয়ে সাময়িক আনন্দ দিতে পারে, স্থায়ী প্রশান্তি দিতে পারে না। সুতরাং প্রকৃত প্রেম কেবল সেই প্রেমই, যা কখনো শেষ হবে না, কখনো ক্ষণস্থায়ী হবে না, আর তা হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রেম।

দুনিয়ার প্রেম ক্ষণস্থায়ী প্রশান্তিঃ
মানুষ নারী-পুরুষের সম্পর্ক, বাড়ি, গাড়ি, ধন-সম্পদ, খ্যাতি বা সন্তানদের মধ্যে প্রেম খুঁজে বেড়ায়। এগুলো হয়তো ক্ষণিকের জন্য আনন্দ দেয়, কিছুটা প্রশান্তিও আনে, কিন্তু স্থায়ী নয়। কারণ, দুনিয়ার প্রতিটি জিনিসই ক্ষণস্থায়ী।

আমাদের প্রিয়জন একদিন মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের ছেড়ে চলে যায়।

ধন-সম্পদ একদিন ধ্বংস হয়ে যায় বা হাতছাড়া হয়ে যায়।

যৌবন, সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য সময়ের সাথে সাথে ম্লান হয়ে পড়ে।

ফলে দুনিয়ার যেকোনো ভালোবাসা অবশেষে মানুষকে কষ্ট দেয়, অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে। ক্ষণস্থায়ী প্রশান্তি কখনো প্রেমের চূড়ান্ত সংজ্ঞা হতে পারে না।

হযরত মাওলানা রুমি (রহ.)-এর দৃষ্টিতে প্রেমঃ

সুফি সাধক মাওলানা রুমি (রহ.) প্রেম বিষয়ে একটি অমোঘ সত্য বলেছেন, “মরণশীল কাউকে ভালোবেসো না। কেননা সে একদিন মরে যাবে, আর তোমাকে কাঁদতেই হবে। ভালোবাসো সেই সত্ত্বাকে, যিনি চিরঞ্জীব।”
এখানেই মূল শিক্ষা হলো—চিরস্থায়ী প্রেম কেবল মহান আল্লাহর সাথেই সম্ভব। কারণ তিনি একমাত্র সত্তা, যিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন। তাঁর প্রতি ভালোবাসা মানুষকে কখনো দুঃখ দেয় না। বরং আল্লাহর প্রেম মানুষকে সব পরিস্থিতিতে ধৈর্য, আশ্বাস এবং প্রশান্তি প্রদান করে।

আল কুরআনের দৃষ্টিতে প্রেমের মানদণ্ডঃ

কুরআন প্রেমের প্রকৃত মানদণ্ড সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ

“বলুন, যদি তোমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, স্ত্রী-পরিজন, স্বজন, উপার্জিত ধনসম্পদ, মন্দার আশঙ্কায় সঞ্চিত ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পছন্দের আবাসভূমি তোমাদের কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদের চেয়ে বেশি প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা করো—আল্লাহ ফয়সালা নিয়ে আসা পর্যন্ত।”
(সূরা আত-তাওবা: ২৪)

এই আয়াত আমাদের স্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয়—দুনিয়ার কোনো সম্পর্ক, সম্পদ, স্বজন বা সুখ-সুবিধা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রেমের চেয়ে অগ্রাধিকার পাবে না। যে প্রেম মানুষকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, সেটি আসলে প্রেম নয়, বরং ক্ষণস্থায়ী ভ্রম।

দুনিয়ার প্রেমের পরিণতিঃ
মানুষ যখন দুনিয়ার প্রেমকে চিরস্থায়ী ভেবে আঁকড়ে ধরে, তখন একসময় ভেঙে পড়ে।

ক. প্রিয়জন হারালে মানুষ ভেঙে যায়।
খ. ধন হারালে বা অবস্থান হারালে অন্তরে অশান্তি নেমে আসে।
গ. নাম, খ্যাতি বা সৌন্দর্য চলে গেলে হৃদয় শূন্য হয়ে পড়ে।

ফলে বোঝা যায়, দুনিয়ার যেকোনো প্রেমই একসময় মানুষকে হতাশ করে। এ জন্য আল্লাহর প্রেম ছাড়া অন্য কোনো প্রেমকে “চিরস্থায়ী প্রেম” বলা যায় না।

আল্লাহর প্রেম, চিরস্থায়ী প্রশান্তিঃ
আল্লাহর প্রেমই হলো সেই প্রেম, যা মৃত্যুর পরেও টিকে থাকে।

ক. আল্লাহর প্রেম মানুষকে দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য শেখায়।

খ. আল্লাহর প্রেম মানুষকে জগতের মোহ থেকে মুক্ত করে।

গ. আল্লাহর প্রেম মানুষকে চিরন্তন জান্নাতের পথে নিয়ে যায়।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি তিনটি জিনিসের স্বাদ গ্রহণ করেছে, সে ঈমানের মিষ্টতা লাভ করেছে।
(১) আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে সবচেয়ে প্রিয় হওয়া।
(২) মানুষকে কেবল আল্লাহর জন্য ভালোবাসা।
(৩) কুফরে ফিরে যাওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো ঘৃণিত হওয়া।”
(সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

এই হাদিসে আল্লাহ ও রাসূলের প্রেমকেই প্রকৃত প্রশান্তির মূল চাবিকাঠি বলা হয়েছে।

প্রেমের চূড়ান্ত সংজ্ঞাঃ
অতএব, প্রেমের সাধারণ সংজ্ঞা হলো অন্তরের প্রশান্তি, আর চূড়ান্ত সংজ্ঞা হলো অন্তরের চিরস্থায়ী প্রশান্তি। দুনিয়ার প্রেম ক্ষণস্থায়ী—তাই তা প্রকৃত প্রেম নয়। একমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রেমই মানুষকে চিরস্থায়ী প্রশান্তি দিতে পারে। কারণ এই প্রেম কখনো ভাঙে না, শেষ হয় না, ধ্বংস হয় না।

মানুষ তার জীবনে নানা রকম প্রেমের অভিজ্ঞতা অর্জন করে। কিন্তু যদি সে আল্লাহর প্রেম না খুঁজে, তবে জীবনের সব প্রেম একসময় কষ্টে রূপ নেয়। দুনিয়ার সবকিছু ক্ষণস্থায়ী, তাই এর প্রতি অতিরিক্ত প্রেম একসময় অশান্তির কারণ হয়। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রেমই হলো সেই প্রেম, যা মানুষকে প্রকৃত অর্থে শান্তি দেয়—এই দুনিয়াতেও, আর আখিরাতেও।

ইবনে কাসির ও অন্যান্য মুফাসসিররা হাদিস উল্লেখ করেছেনঃ
রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
“আল্লাহ পৃথিবীর জন্য নবীদের দেহ খাওয়া হারাম করেছেন। প্রত্যেক নবী তার কবরস্থলে জীবিত আছেন এবং নামাজ আদায় করেন।”
(আবু দাউদ, হাদিস ১০৪৭; ইবনে মাজাহ ১৬৩৬)

মহান আল্লাহ পাক আরো বলেন:
“নিশ্চয়ই আল্লাহর ওলিদের কোন ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।”
(সূরা ইউনুস: ৬২)
অনেক মুফাসসির বলেন, যারা আল্লাহর সত্যিকার ওলি, (বন্ধু) তাঁরা মৃত্যুর পরেও বরকতময় হায়াত লাভ করেন।

অতএব প্রকৃত প্রেম —অনন্তকাল বহমান থাকা চিরস্থায়ী প্রশান্তি। আর তাই মহান আল্লাহ পাক ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসাই হলো প্রেম (চিরস্থায়ী প্রশান্তি)

-গোলাম মোস্তফা ফিচার্স রাইটার ও কলামিস্ট

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”