নড়াইলে এক নারী ইউপি সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

- প্রকাশঃ ০৯:০১:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
- / 26
নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শিউলি বেগম (৫৫)-কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে তিনি নড়াইল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
পরিবার জানায়, শিউলি সম্প্রতি নিজ জমির সীমানা নির্ধারণ করে বাউন্ডারি দেওয়ার উদ্যোগ নেন। ২৬ সেপ্টেম্বর সার্ভেয়ার এনে জমির পরিমাপ করা হয় এবং সেই অনুযায়ী পিলার বসানো শুরু করা হয়; তখন আশপাশের জমির মালিকদের কোনো আপত্তি ছিল না। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই রাতেই একই এলাকার হাফিজুর রহমান শিউলিকে ফোন করে হুমকি দেন।
পরবর্তী দিন ২৮ সেপ্টেম্বর পিলার ও তারকাঁটা দিয়ে বেড়া তৈরির কাজ চলাকালীন হাফিজুরের নির্দেশে তার লোকজন এসে শিউলির স্বামীর ওপর গালিগালাজ ও পিলার ভাঙাচোরা শুরু করে। ঘটনার পর্যবেক্ষণ করেন শিউলির কন্যা মৌসুমি খানম, মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ শুরু করলে হামলাকারীরা মোবাইল কেড়ে নিতে যায়। হামলাকারীরা, অভিযোগ অনুযায়ী, মৌসুমির গলার থেকে দুই ভরির স্বর্ণের চেইন ছিঁড়ে নেয়। এই সময় শিউলি intervene করে রক্ষা করতে গেলে তাকে লাথি মারা হয়; পরে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
শিউলির স্বামী মহসিন আলী বিষয়টি নিয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। মৌসুমি বলেন, “হাফিজুররা আগেই আমাদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিত, চাঁদাও দাবি করত। আমরা জমি মেপে বাউন্ডারি দিয়েছি—কার অনুমতি নিয়ে পিলার দিতে হবে?” তিনি আরও যোগ করেন, “তারা বলেছিল—আমরা যদি তাদের চাঁদা দিতাম, তাহলে সমস্যা হত না।”
অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে জানান, রাস্তার সুবিধার কারণে সমস্যা উত্থাপিত হয়েছে। তার বক্তব্য, “রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে; সরকারি কাজের ক্ষতিসাধন হতে পারে। আমাদের লোকজন প্রতিবাদ করেছে—পিলার ভাঙা বা গহনা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা; আমরা তাদের স্বজন, এমন কাজ করব না।” তিনি আরও বলেন, রাস্তার স্থান সঠিকভাবে নির্ধারণ না করা ছাড়া পিলার রাতরাতি দান কঠিন দাবি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, তিনি ওই সময় বাইরে রয়েছেন এবং অভিযোগের বিষয়টি দেখার জন্য ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, জমি সংক্রান্ত বিবাদ ও অভিযোগের পিছনে ব্যবস্হাপিত চাঁদার দাবির অভিযোগ জাতীয় পর্যায়ে ইতিমধ্যেই সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। তবে মামলার আনুষ্ঠানিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।
এই ঘটনায় আহত শিউলির দ্রুত সুস্থতা ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ থেকে তদন্তের দ্রুততা কামনা করেছে পরিবার। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।