ঢাকা ০১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দ্রুতই ফিরব, ইনশা আল্লাহ— ১৭ বছর পর বিবিসিকে সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান

প্রজন্ম কথা ডেস্ক
  • প্রকাশঃ ০১:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / 36

১৭ বছর পর গণমাধ্যমে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার | ছবি: বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইট থেকে


দীর্ঘ ১৭ বছর পর কোনো গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো তিনি বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। প্রায় ৪৪ মিনিট দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব সোমবার সকালে প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা হবে মঙ্গলবার।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাদির কল্লোল।

দীর্ঘ সময় গণমাধ্যমে কথা না বলার কারণ

বিবিসি বাংলার প্রশ্নে কেন এত দীর্ঘ সময় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি—এর জবাবে তারেক রহমান বলেন,

“ব্যাপারটা বোধ হয় এ রকম নয়, ব্যাপারটা বোধ হয় একটু ভিন্ন। আসলে আমি কথা ঠিকই বলেছি… আমার ওপরে যখন দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে, তখন আমি নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ রেখেছি।”

তিনি দাবি করেন, বিগত সরকারের সময়ে আদালতের আদেশে তাঁর কথা বলার অধিকার “বন্ধ করে দেওয়া” হয়েছিল। গণমাধ্যম চাইলেও তখন তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করতে পারত না।

একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, একবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বক্তব্য দেওয়ার পর তাঁকে “ফেরারি আসামি” উল্লেখ করে সেখানে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

তবে তারেক রহমান বলেন,

“আমি কথা বলেছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায় মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আমি থেমে থাকিনি।”

দেশে ফেরা প্রসঙ্গে

সাম্প্রতিক সময় বিশেষ করে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনা বাড়লেও এখনো ফেরেননি কেন—এ বিষয়ে প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন,

“কিছু সংগত কারণে হয়তো ফেরাটা হয়ে ওঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশা আল্লাহ, দ্রুতই ফিরে আসব।”

কবে ফিরবেন—এমন প্রশ্নে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেন,

“দ্রুতই মনে হয়। দ্রুতই, ইনশা আল্লাহ।”

আগামী নির্বাচনের আগে দেশে ফিরবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন হবে, সেখানে কেমন করে দূরে থাকব? আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগণের সঙ্গে জনগণের মধ্যেই থাকতে।

নিরাপত্তাশঙ্কা প্রসঙ্গে

বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ তাঁর দেশে না ফেরার পেছনে নিরাপত্তাশঙ্কার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন,

“বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তো শুনেছি। সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকেও তো অনেক সময় অনেক শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ

আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী হবেন কি না—এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন,

“যেখানে জনগণের সম্পৃক্ত একটি নির্বাচন হবে, সেখানে তো অবশ্যই নিজেকে দূরে রাখতে পারব না। স্বাভাবিকভাবেই মাঠেই থাকব।”

তবে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশা নিয়ে তিনি বলেন,

“এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের। এটি আমার সিদ্ধান্ত নয়। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।”

সাংবাদিকেরা জানতে চান, নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না। উত্তরে তিনি বলেন,

“সেটা তো অবশ্যই নেব। কেন নেব না?”

তাহলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,

“জি, ইনশা আল্লাহ।”

বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা যেতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি পুনরায় বলেন,

“এটির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের।”
আর দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“সে ক্ষেত্রে তো এটি দল সিদ্ধান্ত নেবে। দল কীভাবে করবে, এটি তো দলের সিদ্ধান্ত।”

১৭ বছর পর দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান নিজের রাজনৈতিক অবস্থান, দেশে ফেরা, আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের প্রশ্নে ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হলে তিনি “জনগণের মধ্যেই” থাকবেন।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হবে মঙ্গলবার।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

দ্রুতই ফিরব, ইনশা আল্লাহ— ১৭ বছর পর বিবিসিকে সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান

প্রকাশঃ ০১:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

১৭ বছর পর গণমাধ্যমে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার | ছবি: বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইট থেকে


দীর্ঘ ১৭ বছর পর কোনো গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো তিনি বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। প্রায় ৪৪ মিনিট দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব সোমবার সকালে প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা হবে মঙ্গলবার।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাদির কল্লোল।

দীর্ঘ সময় গণমাধ্যমে কথা না বলার কারণ

বিবিসি বাংলার প্রশ্নে কেন এত দীর্ঘ সময় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি—এর জবাবে তারেক রহমান বলেন,

“ব্যাপারটা বোধ হয় এ রকম নয়, ব্যাপারটা বোধ হয় একটু ভিন্ন। আসলে আমি কথা ঠিকই বলেছি… আমার ওপরে যখন দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে, তখন আমি নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ রেখেছি।”

তিনি দাবি করেন, বিগত সরকারের সময়ে আদালতের আদেশে তাঁর কথা বলার অধিকার “বন্ধ করে দেওয়া” হয়েছিল। গণমাধ্যম চাইলেও তখন তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করতে পারত না।

একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, একবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বক্তব্য দেওয়ার পর তাঁকে “ফেরারি আসামি” উল্লেখ করে সেখানে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

তবে তারেক রহমান বলেন,

“আমি কথা বলেছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায় মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আমি থেমে থাকিনি।”

দেশে ফেরা প্রসঙ্গে

সাম্প্রতিক সময় বিশেষ করে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনা বাড়লেও এখনো ফেরেননি কেন—এ বিষয়ে প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন,

“কিছু সংগত কারণে হয়তো ফেরাটা হয়ে ওঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশা আল্লাহ, দ্রুতই ফিরে আসব।”

কবে ফিরবেন—এমন প্রশ্নে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেন,

“দ্রুতই মনে হয়। দ্রুতই, ইনশা আল্লাহ।”

আগামী নির্বাচনের আগে দেশে ফিরবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন হবে, সেখানে কেমন করে দূরে থাকব? আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগণের সঙ্গে জনগণের মধ্যেই থাকতে।

নিরাপত্তাশঙ্কা প্রসঙ্গে

বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ তাঁর দেশে না ফেরার পেছনে নিরাপত্তাশঙ্কার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন,

“বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তো শুনেছি। সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকেও তো অনেক সময় অনেক শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ

আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী হবেন কি না—এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন,

“যেখানে জনগণের সম্পৃক্ত একটি নির্বাচন হবে, সেখানে তো অবশ্যই নিজেকে দূরে রাখতে পারব না। স্বাভাবিকভাবেই মাঠেই থাকব।”

তবে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশা নিয়ে তিনি বলেন,

“এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের। এটি আমার সিদ্ধান্ত নয়। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।”

সাংবাদিকেরা জানতে চান, নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না। উত্তরে তিনি বলেন,

“সেটা তো অবশ্যই নেব। কেন নেব না?”

তাহলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,

“জি, ইনশা আল্লাহ।”

বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা যেতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি পুনরায় বলেন,

“এটির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের।”
আর দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“সে ক্ষেত্রে তো এটি দল সিদ্ধান্ত নেবে। দল কীভাবে করবে, এটি তো দলের সিদ্ধান্ত।”

১৭ বছর পর দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান নিজের রাজনৈতিক অবস্থান, দেশে ফেরা, আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের প্রশ্নে ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হলে তিনি “জনগণের মধ্যেই” থাকবেন।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হবে মঙ্গলবার।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”