ঢাকা ০১:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ভারতীয় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত

ইংলিশ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারল না বাংলার মেয়েরা

প্রজন্ম কথা ডেস্ক
  • প্রকাশঃ ১১:৪৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / 18

ভারতীয় আম্পায়ারের দুই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, নাইটের ব্যাটে হেরে গেল বাংলাদেশ | ছবি: সংগৃহীত


ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের একের পর এক বাউন্ডারিতে মাঠের গ্যালারি যেন কেঁপে উঠছিল, আর বাংলাদেশের মেয়েদের মুখে ফুটে উঠছিল হতাশার ছাপ। প্রতিটি চার–ছক্কায় যেন বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নটা একটু একটু করে ম্লান হয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত হিদার নাইটের অপরাজিত ইনিংসই এনে দিল ইংল্যান্ডের জয়, আর বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে নেমে এল নীরবতা।

তবে গল্পটা অন্যরকমও হতে পারত—যদি না দুটি সিদ্ধান্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে যেত।

শূন্য রানে উইকেটের পেছনে নিগার সুলতানার হাতে ধরা পড়েছিলেন হিদার নাইট। মাঠের আম্পায়ার আঙুল তুললেও তৃতীয় আম্পায়ার যথেষ্ট প্রমাণ না পাওয়ায় সেটি নট আউট ঘোষণা করেন। এরপর ১৩ রানে আবারও তাঁর ক্যাচ ধরেন স্বর্ণা আক্তার। কিন্তু ভারতীয় টিভি আম্পায়ার গায়াত্রী ভেনুগোপালান এবারও নাইটকে আউট দেননি।

ম্যাচ শেষে নিজেই নাইট বললেন, দ্বিতীয়বার আমি নিজেও ভেবেছিলাম, হয়তো আউট হয়ে গেছি। সেই নাইটই পরে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন ইংল্যান্ডের পক্ষে।

৩৪ বছর বয়সী হিদার নাইট একাই খেলেছেন ১৫০ ওয়ানডে ম্যাচ। পুরো বাংলাদেশ নারী দল মিলে এখন পর্যন্ত খেলেছে ৭৯টি। অভিজ্ঞতার সেই ব্যবধানই যেন ফলাফলে স্পষ্ট হয়ে উঠল।

মাত্র ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। তখনও স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নাইটের ১১১ বলে ৭৯ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস আর চার্লি ডিনের সঙ্গে ৭৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয় কেড়ে নেয়।

ইনিংসের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। প্রথম ওভারের শেষ বলেই মারুফা আক্তারের শিকার হন ইংলিশ ওপেনার। পরের ওভারে টেমি বেমন্টের ক্যাচ ফেললেও পরে তাকেই ফেরান মারুফা।
ফাহিমা খাতুনের ঘূর্ণিতেই আবারও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। তিন বলের ব্যবধানে আউট করেন ন্যাট সিভার–ব্রান্ট ও সোফিয়া ডাঙ্কলিকে। কিছুক্ষণ পর ফেরান এমা ল্যাম্বকেও। সানজিদা আক্তার ফিরিয়ে দেন অ্যালিস ক্যাপসিকে।

তবু ইংল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত থামানো যায়নি নাইট ও ডিনের অভিজ্ঞতায়।

বাংলাদেশের ১৭৯ রানের ইনিংস গড়া সম্ভব হয়েছে মূলত সোবহানা মোস্তারি ও রাবেয়া খানের ব্যাটে ভর করে।
৩ নম্বরে নেমে সোবহানা করেন ১০৮ বলে ৬০ রান।
৯ নম্বরে নামা রাবেয়া খান খেলেন ঝড়ো ২৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস—যেখানে ছিল ৬ চার ও ১ ছক্কা।

ইংল্যান্ডের মতো পরাশক্তিকে এমন চাপে ফেলতে পারে—এই আত্মবিশ্বাসটাই বাংলাদেশের নারীদের বড় অর্জন।
দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভাগ্য সহায় হয়নি, তবু পারফরম্যান্সে প্রমাণ মিলেছে—বাংলাদেশ এখন লড়াইয়ের দল।

স্কোর সংক্ষেপ:
বাংলাদেশ: ১৭৯/১০ (৪৭ ওভার) — সোবহানা ৬০, রাবেয়া ৪৩
ইংল্যান্ড: ১৮০/৬ (৪৪.৫ ওভার) — নাইট ৭৯*, ডিন ৩৬*; ফাহিমা ৩/৩৫

শেয়ার করুন

ভারতীয় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত

ইংলিশ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারল না বাংলার মেয়েরা

প্রকাশঃ ১১:৪৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

ভারতীয় আম্পায়ারের দুই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, নাইটের ব্যাটে হেরে গেল বাংলাদেশ | ছবি: সংগৃহীত


ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের একের পর এক বাউন্ডারিতে মাঠের গ্যালারি যেন কেঁপে উঠছিল, আর বাংলাদেশের মেয়েদের মুখে ফুটে উঠছিল হতাশার ছাপ। প্রতিটি চার–ছক্কায় যেন বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নটা একটু একটু করে ম্লান হয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত হিদার নাইটের অপরাজিত ইনিংসই এনে দিল ইংল্যান্ডের জয়, আর বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে নেমে এল নীরবতা।

তবে গল্পটা অন্যরকমও হতে পারত—যদি না দুটি সিদ্ধান্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে যেত।

শূন্য রানে উইকেটের পেছনে নিগার সুলতানার হাতে ধরা পড়েছিলেন হিদার নাইট। মাঠের আম্পায়ার আঙুল তুললেও তৃতীয় আম্পায়ার যথেষ্ট প্রমাণ না পাওয়ায় সেটি নট আউট ঘোষণা করেন। এরপর ১৩ রানে আবারও তাঁর ক্যাচ ধরেন স্বর্ণা আক্তার। কিন্তু ভারতীয় টিভি আম্পায়ার গায়াত্রী ভেনুগোপালান এবারও নাইটকে আউট দেননি।

ম্যাচ শেষে নিজেই নাইট বললেন, দ্বিতীয়বার আমি নিজেও ভেবেছিলাম, হয়তো আউট হয়ে গেছি। সেই নাইটই পরে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন ইংল্যান্ডের পক্ষে।

৩৪ বছর বয়সী হিদার নাইট একাই খেলেছেন ১৫০ ওয়ানডে ম্যাচ। পুরো বাংলাদেশ নারী দল মিলে এখন পর্যন্ত খেলেছে ৭৯টি। অভিজ্ঞতার সেই ব্যবধানই যেন ফলাফলে স্পষ্ট হয়ে উঠল।

মাত্র ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। তখনও স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নাইটের ১১১ বলে ৭৯ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস আর চার্লি ডিনের সঙ্গে ৭৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয় কেড়ে নেয়।

ইনিংসের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। প্রথম ওভারের শেষ বলেই মারুফা আক্তারের শিকার হন ইংলিশ ওপেনার। পরের ওভারে টেমি বেমন্টের ক্যাচ ফেললেও পরে তাকেই ফেরান মারুফা।
ফাহিমা খাতুনের ঘূর্ণিতেই আবারও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। তিন বলের ব্যবধানে আউট করেন ন্যাট সিভার–ব্রান্ট ও সোফিয়া ডাঙ্কলিকে। কিছুক্ষণ পর ফেরান এমা ল্যাম্বকেও। সানজিদা আক্তার ফিরিয়ে দেন অ্যালিস ক্যাপসিকে।

তবু ইংল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত থামানো যায়নি নাইট ও ডিনের অভিজ্ঞতায়।

বাংলাদেশের ১৭৯ রানের ইনিংস গড়া সম্ভব হয়েছে মূলত সোবহানা মোস্তারি ও রাবেয়া খানের ব্যাটে ভর করে।
৩ নম্বরে নেমে সোবহানা করেন ১০৮ বলে ৬০ রান।
৯ নম্বরে নামা রাবেয়া খান খেলেন ঝড়ো ২৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস—যেখানে ছিল ৬ চার ও ১ ছক্কা।

ইংল্যান্ডের মতো পরাশক্তিকে এমন চাপে ফেলতে পারে—এই আত্মবিশ্বাসটাই বাংলাদেশের নারীদের বড় অর্জন।
দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভাগ্য সহায় হয়নি, তবু পারফরম্যান্সে প্রমাণ মিলেছে—বাংলাদেশ এখন লড়াইয়ের দল।

স্কোর সংক্ষেপ:
বাংলাদেশ: ১৭৯/১০ (৪৭ ওভার) — সোবহানা ৬০, রাবেয়া ৪৩
ইংল্যান্ড: ১৮০/৬ (৪৪.৫ ওভার) — নাইট ৭৯*, ডিন ৩৬*; ফাহিমা ৩/৩৫