শাহবাগী বুদ্ধিজীবীরা ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত করেছিল: সাদিক কায়েম

- প্রকাশঃ ০১:১১:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
- / 11
সাদিক কায়েম | ছবি: প্রজন্ম কথা
২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন ও তৎকালীন কিছু বুদ্ধিজীবী দেশে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদকে দীর্ঘায়িত করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসুর ভিপি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম।
আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে আয়োজিত ‘শহীদ ইকরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা’–এর পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাদিক কায়েম বলেন, মুক্তির জন্যই আমরা বিগত ১৬ বছর লড়াই করেছি। কিন্তু সমাজের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষকদের একটা অংশ মুক্তির পক্ষে কথা বললেও কৌশলে শেখ হাসিনার জুলুম-নির্যাতনের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে। এইসব বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ভয়াবহ হিপোক্রেসি ছিল।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল। এই ক্যাম্পাসে শিবির ট্যাগ দিয়ে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়েছিল। শিবির বলে ট্যাগ দিলেই বুদ্ধিজীবীরা চুপ হয়ে যেত। এভাবেই শাহবাগ ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা ফ্যাসিবাদকে দীর্ঘায়িত করেছিল।
ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত গুম কমিশনের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে সবচেয়ে বেশি গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। বিএনপির পর আলাদা সংগঠন হিসেবে এককভাবে শিবির সবচেয়ে বেশি গুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমাদের অনেক ভাই এখনও গুম অবস্থায় আছেন, — বলেন তিনি।
নিজেদের মধ্যে যুক্তিনির্ভর আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে সাদিক কায়েম বলেন, আমাদের যৌক্তিক আলোচনা ও পর্যালোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। বিতর্ক সেই সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু এখনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রকৃত অর্থে একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। পাশের দেশ নেপালও শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে, অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেধার চর্চা কম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বিলাল হোসাইন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো ভালো মানুষ তৈরি করা—জ্ঞাননির্ভর সমাজ গঠনের দায়িত্ব এখান থেকেই শুরু হয়। ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এই কাজ চালিয়ে যাবে বলে আমি আশা রাখি।
আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিরোধী দল হিসেবে ইতিহাস বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয় এবং সরকারি দল হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ রানার্স আপ হয়।
ফাইনালে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রুকসানা মিতু।
প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল— ‘জকসু নির্বাচনে এই সংসদ অরাজনৈতিক প্রার্থীদের সমর্থন দিবে।’
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মোট ২৪টি দল অংশ নেয়, প্রতিটি দলে তিনজন করে বিতার্কিক ছিলেন। ট্যাব ফরম্যাটে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় প্রতিটি দল তিনটি করে রাউন্ডে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন শাখা সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন শহীদ ইকরামুল হক সাজিদের বড় বোন ফারজানা হক।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী দর্শক ও শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।