ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিস্তা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও— কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

কুবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ১২:২০:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / 9

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আঞ্চলিক সংগঠন ‘উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ’ | ছবি: প্রজন্ম কথা


তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আঞ্চলিক সংগঠন ‘উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ’।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন সংগঠনটির সদস্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘তিস্তা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘আমাদের তিস্তা, বুঝে নেব হিস্যা’, ‘জাগো বাহে কোনঠে সবাই’—এমন নানা স্লোগান দেন।

আয়োজকেরা বলেন, তিস্তা নদী খনন ও প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর মূলধারা গভীর ও প্রশস্ত করা, আধুনিক ব্যারেজ ও রিজার্ভয়ার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সেচব্যবস্থার সম্প্রসারণ, ভাঙনরোধে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ এবং নদীভিত্তিক কৃষি, মৎস্য ও পর্যটন উন্নয়নকে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তাঁরা আরও দাবি জানান, বাংলাদেশ–ভারত যৌথ নদী কমিশন (JRC)–এর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা, আন্তর্জাতিক তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন এবং “তিস্তা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (Teesta River Basin Authority)” গঠন করে নদীভিত্তিক অর্থনীতি, কৃষি ও শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও কুবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার বলেন, তিস্তা প্রকল্পের ন্যায্য হিস্যা আমাদের প্রাপ্য। আমরা চাই প্রধান উপদেষ্টা তাঁর আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এই ইস্যু আন্তর্জাতিক আদালতে তুলুন। দেশের শিক্ষার্থীরা তাঁর পাশে থাকবে।

কুবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, তিস্তা প্রকল্প শুধু উত্তরবঙ্গের নয়, গোটা বাংলাদেশের সমস্যা। প্রয়োজনের সময় ভারত পানি আটকায়, আবার ছেড়ে দেয় যখন ক্ষতি হয়। এই অন্যায় বন্ধ করতে হবে।

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুন বলেন, উত্তরবঙ্গে এখন আগের মতো ফলন হয় না। তিস্তা বাঁচলে কৃষক বাঁচবে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, তিস্তা নদী উত্তরবঙ্গের কৃষি ও জীবনের মূল অবলম্বন। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব মানুষকে হতাশ করেছে। আমরা চাই সরকার দ্রুত সমাধান দিক।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন বলেন, তিস্তা শুধু নদী নয়, এটি উত্তরবঙ্গের প্রাণ। তিস্তা মরলে কৃষক, প্রকৃতি, সংস্কৃতি—সবকিছুই মরে যাবে। আমরা এই অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।

সভাপতি নাইম আহমেদ বলেন, তিস্তা সমস্যার সমাধান শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন চাই। সাত দফা দাবি মেনে নিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে তফসিল ঘোষণার আগে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

তিস্তা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও— কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

প্রকাশঃ ১২:২০:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আঞ্চলিক সংগঠন ‘উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ’ | ছবি: প্রজন্ম কথা


তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আঞ্চলিক সংগঠন ‘উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ’।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন সংগঠনটির সদস্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘তিস্তা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘আমাদের তিস্তা, বুঝে নেব হিস্যা’, ‘জাগো বাহে কোনঠে সবাই’—এমন নানা স্লোগান দেন।

আয়োজকেরা বলেন, তিস্তা নদী খনন ও প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর মূলধারা গভীর ও প্রশস্ত করা, আধুনিক ব্যারেজ ও রিজার্ভয়ার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সেচব্যবস্থার সম্প্রসারণ, ভাঙনরোধে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ এবং নদীভিত্তিক কৃষি, মৎস্য ও পর্যটন উন্নয়নকে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তাঁরা আরও দাবি জানান, বাংলাদেশ–ভারত যৌথ নদী কমিশন (JRC)–এর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা, আন্তর্জাতিক তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন এবং “তিস্তা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (Teesta River Basin Authority)” গঠন করে নদীভিত্তিক অর্থনীতি, কৃষি ও শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও কুবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার বলেন, তিস্তা প্রকল্পের ন্যায্য হিস্যা আমাদের প্রাপ্য। আমরা চাই প্রধান উপদেষ্টা তাঁর আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এই ইস্যু আন্তর্জাতিক আদালতে তুলুন। দেশের শিক্ষার্থীরা তাঁর পাশে থাকবে।

কুবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, তিস্তা প্রকল্প শুধু উত্তরবঙ্গের নয়, গোটা বাংলাদেশের সমস্যা। প্রয়োজনের সময় ভারত পানি আটকায়, আবার ছেড়ে দেয় যখন ক্ষতি হয়। এই অন্যায় বন্ধ করতে হবে।

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুন বলেন, উত্তরবঙ্গে এখন আগের মতো ফলন হয় না। তিস্তা বাঁচলে কৃষক বাঁচবে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, তিস্তা নদী উত্তরবঙ্গের কৃষি ও জীবনের মূল অবলম্বন। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব মানুষকে হতাশ করেছে। আমরা চাই সরকার দ্রুত সমাধান দিক।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন বলেন, তিস্তা শুধু নদী নয়, এটি উত্তরবঙ্গের প্রাণ। তিস্তা মরলে কৃষক, প্রকৃতি, সংস্কৃতি—সবকিছুই মরে যাবে। আমরা এই অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।

সভাপতি নাইম আহমেদ বলেন, তিস্তা সমস্যার সমাধান শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন চাই। সাত দফা দাবি মেনে নিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে তফসিল ঘোষণার আগে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”