নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের গায়ে আগুন, দুজনের মৃত্যু
- প্রকাশঃ ১১:১০:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
- / 12
নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মা-ছেলে মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া দুজন হলেন রিনা বেগম (৩৮) ও তাঁর ছেলে ফরহাদ (১৫)। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন রিনার ছোট ছেলে তাওহীদ (৭)। তাঁর শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন রিনার বড় ছেলে জিহাদ (২৪), বোন সালমা বেগম (৩৪) ও ভাগনে আরাফাত (১৫)।
ঘটনার অভিযুক্ত ফরিদ মিয়া (৪৪) পেশায় পিকআপচালক এবং নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকার বাসিন্দা।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, “আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া নয়টায় রিনা বেগম এবং বেলা একটার দিকে তাঁর ছেলে ফরহাদ মারা যান। রিনার শরীরের ৫৮ শতাংশ এবং ফরহাদের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।”
গত বুধবার রাত তিনটার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার ঘোড়াদিয়া এলাকায় এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে। স্ত্রী রিনা বেগম ও সন্তানদের ওপর পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন ফরিদ মিয়া। এরপর ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদ ও রিনার মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জেরে কয়েক সপ্তাহ আগে তিন সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান রিনা। ঘটনার রাতে ফরিদ সেখানে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁদের ওপর আগুন ধরিয়ে দেন।
প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে টিনের ঘরের দরজা ভেঙে দগ্ধদের উদ্ধার করে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় দগ্ধ ছয়জনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
রিনা বেগমের মা হোসনা বেগম শুক্রবার রাতে ফরিদ মিয়াকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। শনিবার রাতে রায়পুরা থানার বারৈচা এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় ফরিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, মামলার একমাত্র আসামি ফরিদ বর্তমানে কারাগারে আছে। এ ঘটনায় এখন মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।



























