ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবজির দামে স্বস্তি, তবে বেড়েছে আটার চাপ — কেজিতে বাড়তি ৫ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ১১:০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 15

রাজধানীর বাজারে কিছু সবজির দাম কমলেও বেড়েছে আটার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা আটার দাম বেড়েছে ৫ টাকা। একই সময়ে মোড়কজাত আটার দুই কেজির প্যাকেটের দামও বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে মোড়কজাত দুই কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও এই আটা কেনা যেত ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। খোলা আটার কেজি এখন ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫ টাকা।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০–৯৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছিল ১১০ টাকা, আর খোলা আটার দাম দাঁড়িয়েছিল ৪৫–৪৮ টাকায়।

চালের বাজারেও সামান্য উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে মঞ্জুর, সাগর, ডায়মন্ড ও আনোয়ার—এই চার ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা বেড়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা এখনও ৮০–৮২ টাকায় এই চাল বিক্রি করছেন। নাজির ও পাইজাম চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মুরগি ও ডিমের বাজারে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায়। ফার্মের বাদামি ডিম ডজনে ১৪০ টাকা, সাদা ডিম ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম না বাড়লেও ডিলার পর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের কমিশন কমে গেছে। আগে ৫ লিটারের বোতল ৮৯০–৮৯৫ টাকায় কিনে ৯১৫–৯২০ টাকায় বিক্রি করতেন; এখন কিনছেন ৯০০–৯১০ টাকায়, কিন্তু বিক্রি করছেন আগের দামে।

তবে বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে। বিক্রেতাদের অভিযোগ, ডিলাররা এখন কম পরিমাণে তেল দিচ্ছেন। মোহাম্মদপুরের খুচরা বিক্রেতা হুমায়ুন কবীর জানান, “ডিলারের কাছে পাঁচ কার্টন তেল চেয়েছিলাম, তারা মাত্র দুই কার্টন দিয়েছে।”

এদিকে শীতের আগাম ইঙ্গিতে বেড়েছে চা–পাতার দাম। দুই সপ্তাহে কেজিপ্রতি দাম ১০০ টাকা বেড়ে এখন ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে স্বস্তির খবর—খোলা চিনির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে; দুই সপ্তাহ আগে ১১০ টাকা থাকলেও এখন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আগাম শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে, ফলে কিছু সবজির দাম কমেছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৮০ থেকে ১৪০ টাকায়, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, আর করলা, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এক–দুই সপ্তাহ আগেও এসব সবজির দাম কেজিতে ১০–২০ টাকা বেশি ছিল।

তবে আগাম শীতের শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপির মতো সবজির দাম এখনো কিছুটা বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে বলে আশা বিক্রেতাদের।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও বেসরকারি চাকরিজীবী সারোয়ার হোসেন বলেন,
দুই–তিন মাস ধরে সবজির দাম অনেক বেশি ছিল। এখন কিছুটা কমেছে, কিন্তু একই সময়ে বেড়েছে আটা আর চালের দাম। বাড়তি খরচ থেকে মুক্তি মিলছে না।

সূত্র: প্রথম আলো

প্রাসঙ্গিক

শেয়ার করুন

সবজির দামে স্বস্তি, তবে বেড়েছে আটার চাপ — কেজিতে বাড়তি ৫ টাকা

প্রকাশঃ ১১:০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর বাজারে কিছু সবজির দাম কমলেও বেড়েছে আটার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা আটার দাম বেড়েছে ৫ টাকা। একই সময়ে মোড়কজাত আটার দুই কেজির প্যাকেটের দামও বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে মোড়কজাত দুই কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও এই আটা কেনা যেত ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। খোলা আটার কেজি এখন ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫ টাকা।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০–৯৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছিল ১১০ টাকা, আর খোলা আটার দাম দাঁড়িয়েছিল ৪৫–৪৮ টাকায়।

চালের বাজারেও সামান্য উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে মঞ্জুর, সাগর, ডায়মন্ড ও আনোয়ার—এই চার ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা বেড়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা এখনও ৮০–৮২ টাকায় এই চাল বিক্রি করছেন। নাজির ও পাইজাম চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মুরগি ও ডিমের বাজারে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায়। ফার্মের বাদামি ডিম ডজনে ১৪০ টাকা, সাদা ডিম ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম না বাড়লেও ডিলার পর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের কমিশন কমে গেছে। আগে ৫ লিটারের বোতল ৮৯০–৮৯৫ টাকায় কিনে ৯১৫–৯২০ টাকায় বিক্রি করতেন; এখন কিনছেন ৯০০–৯১০ টাকায়, কিন্তু বিক্রি করছেন আগের দামে।

তবে বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে। বিক্রেতাদের অভিযোগ, ডিলাররা এখন কম পরিমাণে তেল দিচ্ছেন। মোহাম্মদপুরের খুচরা বিক্রেতা হুমায়ুন কবীর জানান, “ডিলারের কাছে পাঁচ কার্টন তেল চেয়েছিলাম, তারা মাত্র দুই কার্টন দিয়েছে।”

এদিকে শীতের আগাম ইঙ্গিতে বেড়েছে চা–পাতার দাম। দুই সপ্তাহে কেজিপ্রতি দাম ১০০ টাকা বেড়ে এখন ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে স্বস্তির খবর—খোলা চিনির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে; দুই সপ্তাহ আগে ১১০ টাকা থাকলেও এখন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আগাম শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে, ফলে কিছু সবজির দাম কমেছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৮০ থেকে ১৪০ টাকায়, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, আর করলা, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এক–দুই সপ্তাহ আগেও এসব সবজির দাম কেজিতে ১০–২০ টাকা বেশি ছিল।

তবে আগাম শীতের শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপির মতো সবজির দাম এখনো কিছুটা বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে বলে আশা বিক্রেতাদের।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও বেসরকারি চাকরিজীবী সারোয়ার হোসেন বলেন,
দুই–তিন মাস ধরে সবজির দাম অনেক বেশি ছিল। এখন কিছুটা কমেছে, কিন্তু একই সময়ে বেড়েছে আটা আর চালের দাম। বাড়তি খরচ থেকে মুক্তি মিলছে না।

সূত্র: প্রথম আলো