ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে রাতে পুলিশের অভিযান, ভোরে ধানখেতে প্রাইভেট শিক্ষকের রক্তাক্ত লাশ

  • প্রকাশঃ ০৯:১০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 13

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পুলিশের অভিযান টেরে পালিয়ে ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও এলাকাবাসীর ভিড়। শুক্রবার সকালে।   ছবি: সংগৃহীত     


ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক প্রাইভেট শিক্ষককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওই শিক্ষকের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। পরে শুক্রবার ভোরে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম আবু সাদাদ সায়েম (৫০)। তিনি হালুয়াঘাট উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত সাদাদের বাবা মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জেরে গত শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে প্রতিপক্ষের লোকজন হালুয়াঘাট থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার ১ নম্বর আসামি ছিলেন সাদাদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সাদাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাদাদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে আসে।

পরে শুক্রবার ভোরে বাড়ির পাশে ধানখেতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্বজনেরা। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।

সাদাদের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, “পুলিশের সহযোগিতায় বাদীপক্ষের লোকজন আমার ভাইকে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে গেছে। পুলিশ আসামি ধরার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিল।”

অভিযোগের বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার এসআই মানিক মিয়া বলেন, “আমরা শুধু আসামি ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু পাইনি। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। আমাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম জানান, নিহতের শরীরে কামড় ও আঁচড়ের দাগসহ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তবে গুরুতর আঘাত পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “পুলিশ নিহতের বাবাকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে গিয়েছিল। পরিবার চাইলে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

প্রাসঙ্গিক

শেয়ার করুন

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে রাতে পুলিশের অভিযান, ভোরে ধানখেতে প্রাইভেট শিক্ষকের রক্তাক্ত লাশ

প্রকাশঃ ০৯:১০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পুলিশের অভিযান টেরে পালিয়ে ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও এলাকাবাসীর ভিড়। শুক্রবার সকালে।   ছবি: সংগৃহীত     


ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক প্রাইভেট শিক্ষককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওই শিক্ষকের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। পরে শুক্রবার ভোরে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম আবু সাদাদ সায়েম (৫০)। তিনি হালুয়াঘাট উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত সাদাদের বাবা মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জেরে গত শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে প্রতিপক্ষের লোকজন হালুয়াঘাট থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার ১ নম্বর আসামি ছিলেন সাদাদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সাদাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাদাদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে আসে।

পরে শুক্রবার ভোরে বাড়ির পাশে ধানখেতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্বজনেরা। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।

সাদাদের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, “পুলিশের সহযোগিতায় বাদীপক্ষের লোকজন আমার ভাইকে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে গেছে। পুলিশ আসামি ধরার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিল।”

অভিযোগের বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার এসআই মানিক মিয়া বলেন, “আমরা শুধু আসামি ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু পাইনি। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। আমাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম জানান, নিহতের শরীরে কামড় ও আঁচড়ের দাগসহ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তবে গুরুতর আঘাত পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “পুলিশ নিহতের বাবাকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে গিয়েছিল। পরিবার চাইলে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”