তরুণদের মধ্যে বাড়ছে এইচআইভি সংক্রমণ, আক্রান্তদের অধিকাংশ সমকামী
- প্রকাশঃ ০৮:০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
- / 5
ছবি: এআই / প্রজন্ম কথা
রাজশাহীতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এইচআইভি (এইডস) সংক্রমণ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত নতুন করে ২৮ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে এইডসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজশাহীতে সমকামী সম্পর্কের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণ বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে একটি এইচআইভি ট্রিটমেন্ট সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রামেকের এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সেলিং (এইচটিসি) সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৪৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৩ জনের দেহে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ, দুইজন নারী ও একজন তৃতীয় লিঙ্গের। একই সময়ে মারা গেছেন আটজন রোগী। আক্রান্তদের অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
২০২৪ সালের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সে বছর শনাক্ত ২৭ জনের মধ্যে ১৬ জনই সমকামী সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। চলতি বছরও একই প্রবণতা দেখা গেছে—২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শনাক্ত ২৮ জনের মধ্যে ১৭ জনের সংক্রমণ ঘটেছে পুরুষ-পুরুষ সম্পর্কের মাধ্যমে।
রামেকের কাউন্সেলর রেজাউল করিম বলেন, এইচআইভি শনাক্ত হওয়ার পর অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, কেউ কেউ আত্মহত্যার কথাও ভাবেন। আমরা তাদের নিয়মিত কাউন্সেলিং করি, যেন তারা চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহাম্মদ জানান, এইচআইভি রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমরা একটি ট্রিটমেন্ট সেন্টার চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। রুম সংস্কারের কাজ চলছে। এটি চালু হলে রোগীদের আর বগুড়ায় যেতে হবে না।
বর্তমানে রাজশাহীতে শুধুমাত্র পরীক্ষা ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা থাকায় অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বাধ্য হন।
রামেকের ফোকাল পারসন ডা. ইবরাহীম মো. শরফ বলেন, অরক্ষিত যৌন সম্পর্কই এইচআইভি সংক্রমণের প্রধান মাধ্যম—নারী-পুরুষ বা পুরুষ-পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই। এছাড়া মা থেকে সন্তানেও সংক্রমণ হতে পারে। তাই সচেতনতা ও সুরক্ষিত আচরণের বিকল্প নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রমণ বাড়ার অন্যতম কারণ হলো তরুণদের মধ্যে যৌন সচেতনতার অভাব ও অনিরাপদ সম্পর্ক। সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে আক্রান্তরা দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।



























