ঢাকা ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিতার মৃত্যু সনদ নিয়েও পরীক্ষা দিতে পারলেন না UIU- এর শিক্ষার্থী, ডিপার্টমেন্ট হেড এর বিরুদ্ধে অভিযোগ

  • প্রকাশঃ ০৮:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / 35

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (UIU) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পিতার মৃত্যুর পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও বিভাগীয় প্রধানের কাছ থেকে কোনো সহানুভূতি বা সহযোগিতা পাননি। বরং ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ উপস্থাপন করার পর তাকে জানানো হয়, এ কাগজ গ্রহণযোগ্য নয়।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন মিডটার্ম পরীক্ষার মাত্র পাঁচ দিন আগে ওই শিক্ষার্থীর বাবা মারা যান। শোকাহত অবস্থায় প্রথম কয়েকটি পরীক্ষা দিতে না পারায় তিনি নিয়ম অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নুরুল হুদার ‘ব্যস্ততার’ কারণে একাধিকবার চেষ্টা করেও সরাসরি দেখা করার সুযোগ পাননি তিনি।

শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় রুমের আশেপাশে অপেক্ষা করে একদিন অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান শিক্ষার্থীটি। তখন তিনি বাবার মেডিকেল ডেথ সার্টিফিকেট দেখান। তবে অভিযোগ অনুযায়ী, অধ্যাপক হুদা সেই সনদপত্র অগ্রাহ্য করে বলেন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কমিশনারের পক্ষ থেকে আলাদা সনদপত্র আনতে হবে অন্যথায় কোনো ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার সুযোগ বা ফি মওকুফের সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বলেন আমি শোকাহত অবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আমার বাবা মারা গেছেন, ভাইও নেই, একা সব কিছু সামলাতে হয়েছে। তারপরও অনেক কষ্ট করে চেষ্টা করেছি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করতে। কিন্তু তিন দিনের মধ্যে তা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার অধ্যাপক হুদার কাছে আবারও যাওয়ার কথা থাকলেও, পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। অথচ আগেই জানানো হয়েছিল ওই দিন তিনি ‘ফ্রি’ থাকবেন।


আরও পড়ুন

শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক ডিগ্রি বাতিলের বিষয়ে ভাবছে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়


শুধু এই শিক্ষার্থী নন, আরও অনেক শিক্ষার্থী বিভাগীয় প্রধানের ‘কঠোরতা’ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। কেউ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ জমা দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আইসিইউ থেকে ফিরেও মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু স্যারের ভাষ্য ছিল—‘এই রিপোর্টও ফেক বানানো যায়।’ এমন মন্তব্য শুনে আমি হতবাক হয়ে যাই।

এক সিনিয়র শিক্ষার্থী বলেন, “ড. নুরুল হুদা হয়তো ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ, কিন্তু একজন বিভাগীয় প্রধান হিসেবে মানবিকতা ও প্রশাসনিক দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ ও নীতিমালায় মানবিকতার প্রতিফলন চান।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

পিতার মৃত্যু সনদ নিয়েও পরীক্ষা দিতে পারলেন না UIU- এর শিক্ষার্থী, ডিপার্টমেন্ট হেড এর বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশঃ ০৮:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (UIU) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পিতার মৃত্যুর পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও বিভাগীয় প্রধানের কাছ থেকে কোনো সহানুভূতি বা সহযোগিতা পাননি। বরং ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ উপস্থাপন করার পর তাকে জানানো হয়, এ কাগজ গ্রহণযোগ্য নয়।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন মিডটার্ম পরীক্ষার মাত্র পাঁচ দিন আগে ওই শিক্ষার্থীর বাবা মারা যান। শোকাহত অবস্থায় প্রথম কয়েকটি পরীক্ষা দিতে না পারায় তিনি নিয়ম অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নুরুল হুদার ‘ব্যস্ততার’ কারণে একাধিকবার চেষ্টা করেও সরাসরি দেখা করার সুযোগ পাননি তিনি।

শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় রুমের আশেপাশে অপেক্ষা করে একদিন অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান শিক্ষার্থীটি। তখন তিনি বাবার মেডিকেল ডেথ সার্টিফিকেট দেখান। তবে অভিযোগ অনুযায়ী, অধ্যাপক হুদা সেই সনদপত্র অগ্রাহ্য করে বলেন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কমিশনারের পক্ষ থেকে আলাদা সনদপত্র আনতে হবে অন্যথায় কোনো ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার সুযোগ বা ফি মওকুফের সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বলেন আমি শোকাহত অবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আমার বাবা মারা গেছেন, ভাইও নেই, একা সব কিছু সামলাতে হয়েছে। তারপরও অনেক কষ্ট করে চেষ্টা করেছি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করতে। কিন্তু তিন দিনের মধ্যে তা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার অধ্যাপক হুদার কাছে আবারও যাওয়ার কথা থাকলেও, পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। অথচ আগেই জানানো হয়েছিল ওই দিন তিনি ‘ফ্রি’ থাকবেন।


আরও পড়ুন

শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক ডিগ্রি বাতিলের বিষয়ে ভাবছে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়


শুধু এই শিক্ষার্থী নন, আরও অনেক শিক্ষার্থী বিভাগীয় প্রধানের ‘কঠোরতা’ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। কেউ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ জমা দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আইসিইউ থেকে ফিরেও মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু স্যারের ভাষ্য ছিল—‘এই রিপোর্টও ফেক বানানো যায়।’ এমন মন্তব্য শুনে আমি হতবাক হয়ে যাই।

এক সিনিয়র শিক্ষার্থী বলেন, “ড. নুরুল হুদা হয়তো ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ, কিন্তু একজন বিভাগীয় প্রধান হিসেবে মানবিকতা ও প্রশাসনিক দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ ও নীতিমালায় মানবিকতার প্রতিফলন চান।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”