ছুরিকাঘাতে প্রেমিকাকে জখম করে নিজেকেও আঘাত, দুজনই হাসপাতালে

- প্রকাশঃ ০১:০১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
- / 19
সুনামগঞ্জ শহরে প্রেমিকার বিয়ের খবরে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ। হামলার পর নিজেকেও ছুরিকাঘাত করেন তিনি। বর্তমানে দুজনই সিলেটের দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত তরুণী (২৬) একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায়। অভিযুক্ত পার্থ (২৮) শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই পার্থ ও তরুণীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক নেতৃত্বে পরিবর্তনের পর সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়।
সম্প্রতি মেয়েটির পরিবার অন্যত্র বিয়ের আয়োজন করে, আগামী ১ জুন বিয়ের দিন ধার্য ছিল। বিয়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি বড় ভাইয়ের বাসায় অবস্থান করছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাবির সঙ্গে পার্লারে যাওয়ার সময় হাসননগর এলাকায় হঠাৎ পার্থ তাকে পথরোধ করে। একপর্যায়ে একপাশে ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তরুণীর শরীরে অন্তত ১০টি ছুরির আঘাতের চিহ্ন ছিল, যার মধ্যে ৯টি গভীর। তাকে তাৎক্ষণিক সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
অন্যদিকে হামলার পর পার্থ শহরের ধোপাখালী শশ্মানঘাট এলাকায় গিয়ে নিজের শরীরেও ছুরিকাঘাত করেন। পথচারীরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর থেকে পার্থ নানা মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বিয়ের খবর জানার পর বিষয়টি বন্ধ করার জন্য চাপ দেন এবং ব্যর্থ হয়ে প্রাণনাশের হুমকিও দেন। অভিযুক্তের পরিবারের কাছেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা গুরুত্ব দেননি।
এদিকে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমান বলেন,
“আসামি সঞ্জীবনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চিকিৎসা শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।”
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিবেদক: তুর্য দাস