ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢলের পানিতে ভেসে আসা কয়লা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন শ্রমিকরা

  • প্রকাশঃ ০৬:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / 22

ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাদুকাটা, মাহারাম, বৌলাই, রক্তি ও পাটলাই নদীতে হঠাৎ পানি বেড়ে যায়। নদীগুলোর প্রবল স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসছে কয়লা, যা সীমান্ত এলাকার অনেক দরিদ্র মানুষের জন্য হয়ে উঠেছে জীবিকার নতুন উৎস।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাঁও ছড়ায় কয়লা আসার দৃশ্য সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নারী-পুরুষসহ শত শত শ্রমিক এখানে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ঠেলা জাল দিয়ে কয়লা সংগ্রহ করছেন। ভরা স্রোতের মধ্যে দাঁড়িয়ে কয়লা কুড়িয়ে তা বস্তায় ভরে বিক্রি করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে।


ছবি: প্রজন্ম কথা


কয়লা সংগ্রহকারী সাকিরুল মিয়া বলেন, বর্ষায় প্রচুর বৃষ্টি হলে কলাগাঁও ছড়া দিয়ে অনেক কয়লা ভেসে আসে। তখন ঠেলা জালে দিনে ৫-১০ বস্তা কয়লা পাওয়া যায়। প্রতিটি বস্তা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ২০০ টাকায় বিক্রি করি। এভাবেই সংসার চলে।

নদী ও হাওরের পানি একাকার হয়ে যাওয়ায় নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলে পরিবারগুলোও চরম সংকটে পড়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে মেঘালয়ের কয়লা খনি থেকে পানির টানে নুড়ি ও বালুমিশ্রিত কয়লা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্তের অন্তত ২০টি পাহাড়ি ছড়ায় স্থানীয়রা যুগ যুগ ধরে এই কয়লা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এটি একাধারে কঠিন শ্রমনির্ভর এবং ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হলেও বিকল্প না থাকায় এই পথেই হাঁটছেন তারা।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, নদীর স্রোতে ভেসে আসা বালুমিশ্রিত কয়লা ঠেলা জালে ছেঁকে আলাদা করা অত্যন্ত কষ্টকর। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে এটি করছে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছি এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি।

প্রতিবেদক: তুর্য দাস

শেয়ার করুন

ঢলের পানিতে ভেসে আসা কয়লা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন শ্রমিকরা

প্রকাশঃ ০৬:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাদুকাটা, মাহারাম, বৌলাই, রক্তি ও পাটলাই নদীতে হঠাৎ পানি বেড়ে যায়। নদীগুলোর প্রবল স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসছে কয়লা, যা সীমান্ত এলাকার অনেক দরিদ্র মানুষের জন্য হয়ে উঠেছে জীবিকার নতুন উৎস।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাঁও ছড়ায় কয়লা আসার দৃশ্য সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নারী-পুরুষসহ শত শত শ্রমিক এখানে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ঠেলা জাল দিয়ে কয়লা সংগ্রহ করছেন। ভরা স্রোতের মধ্যে দাঁড়িয়ে কয়লা কুড়িয়ে তা বস্তায় ভরে বিক্রি করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে।


ছবি: প্রজন্ম কথা


কয়লা সংগ্রহকারী সাকিরুল মিয়া বলেন, বর্ষায় প্রচুর বৃষ্টি হলে কলাগাঁও ছড়া দিয়ে অনেক কয়লা ভেসে আসে। তখন ঠেলা জালে দিনে ৫-১০ বস্তা কয়লা পাওয়া যায়। প্রতিটি বস্তা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ২০০ টাকায় বিক্রি করি। এভাবেই সংসার চলে।

নদী ও হাওরের পানি একাকার হয়ে যাওয়ায় নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলে পরিবারগুলোও চরম সংকটে পড়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে মেঘালয়ের কয়লা খনি থেকে পানির টানে নুড়ি ও বালুমিশ্রিত কয়লা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্তের অন্তত ২০টি পাহাড়ি ছড়ায় স্থানীয়রা যুগ যুগ ধরে এই কয়লা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এটি একাধারে কঠিন শ্রমনির্ভর এবং ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হলেও বিকল্প না থাকায় এই পথেই হাঁটছেন তারা।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, নদীর স্রোতে ভেসে আসা বালুমিশ্রিত কয়লা ঠেলা জালে ছেঁকে আলাদা করা অত্যন্ত কষ্টকর। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে এটি করছে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছি এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি।

প্রতিবেদক: তুর্য দাস