বাংলাদেশে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আরও ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এই নিয়ে চলতি জুন মাসে মোট ৫৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার হার ছিল ১২.৮৭ শতাংশ, যা মোট শনাক্ত হার ১৩.০৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে ১০১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৩টিতে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। একই সময় সুস্থ হয়েছেন মাত্র ২ জন। বর্তমানে দেশে করোনা থেকে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০,১৯,৩৭৮ জনে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি, তবে গত বৃহস্পতিবার একজনের মৃত্যু হয়েছিল। মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯,৫০০ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০,৫১,৭৬০ জন।
স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে সম্প্রতি অমিক্রনের উপধরন JN.1–এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এই ধরনটিকে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর কারণে এই ধরনটি বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে।
এছাড়াও, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জানিয়েছে, দেশে করোনার আরও দুটি নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে – XFG এবং XFC। উভয়ই JN-1 এর শক্তিশালী উপধরন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে, সবারই সতর্ক ও সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।
আইসিডিডিআরবির ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভাইরাসের ধরন স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তনশীল। তবে নতুন ধরনগুলো নিয়েও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতন থাকাটাই জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ মে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভারতের কিছু অঞ্চলে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস NB.1.8.1 দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সংক্রমণের হারও তুলনামূলকভাবে বেশি।
করোনা সংক্রমণের সংখ্যা আবারও বাড়তে থাকায় বিশেষজ্ঞরা সবাইকে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলার মতো প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিশ্বজুড়ে মহামারির পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, এই ধরনের সংক্রমণ দেখাচ্ছে— করোনা এখনও বিদায় নেয়নি। তাই আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
