ঢাকা ০৯:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে কবর থেকে তুলে নেওয়ার পর পুড়িয়ে দেওয়া হলো নুরাল পাগলার লাশ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৯:২০:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 2

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় পরে কবর থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নূরাল পাগলার লাশ | ছবি: সংগৃহীত


রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলা ইমান–আকিদা রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল লোক এ হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। হামলাকারীরা পরে কবর থেকে নুরাল পাগলার লাশ উত্তোলন করে মহাসড়কের মোড়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন নুরুল হক, যিনি স্থানীয়ভাবে নুরাল পাগলা নামে পরিচিত ছিলেন। গত ২৩ আগস্ট বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতে বিশেষ কায়দায় মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে আস্তানার ভেতরে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় আলেম সমাজের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরে উপজেলা ইমান–আকিদা রক্ষা কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে দরবারে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ তোলে এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর সমতল করার আলটিমেটাম দেয়। অন্যথায় শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে শাবল, হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা হাতে একদল লোক নুরাল পাগলার দরবারের দিকে অগ্রসর হয়।

পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এরপর কয়েক শ লোক দরবারে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। দরবারের ভক্তরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা নুরুল হকের লাশ কবর থেকে তুলে এনে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডের পদ্মার মোড়ে পুড়িয়ে দেয়।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা কৌশিক কুমার দাস বলেন, আহতদের শরীরে ইটপাটকেল, লাঠি ও ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর কয়েকজনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। দরবারটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি বলেন, “হতাহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

রাজবাড়ীতে কবর থেকে তুলে নেওয়ার পর পুড়িয়ে দেওয়া হলো নুরাল পাগলার লাশ

প্রকাশঃ ০৯:২০:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় পরে কবর থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নূরাল পাগলার লাশ | ছবি: সংগৃহীত


রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলা ইমান–আকিদা রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল লোক এ হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। হামলাকারীরা পরে কবর থেকে নুরাল পাগলার লাশ উত্তোলন করে মহাসড়কের মোড়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন নুরুল হক, যিনি স্থানীয়ভাবে নুরাল পাগলা নামে পরিচিত ছিলেন। গত ২৩ আগস্ট বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতে বিশেষ কায়দায় মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে আস্তানার ভেতরে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় আলেম সমাজের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরে উপজেলা ইমান–আকিদা রক্ষা কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে দরবারে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ তোলে এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর সমতল করার আলটিমেটাম দেয়। অন্যথায় শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে শাবল, হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা হাতে একদল লোক নুরাল পাগলার দরবারের দিকে অগ্রসর হয়।

পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এরপর কয়েক শ লোক দরবারে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। দরবারের ভক্তরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা নুরুল হকের লাশ কবর থেকে তুলে এনে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডের পদ্মার মোড়ে পুড়িয়ে দেয়।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা কৌশিক কুমার দাস বলেন, আহতদের শরীরে ইটপাটকেল, লাঠি ও ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর কয়েকজনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। দরবারটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি বলেন, “হতাহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”