ঢাকা ০৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে সাগরে নিখোঁজ চবি শিক্ষার্থী অরিত্র: ১২ দিনেও মেলেনি সন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ০১:১৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • / 4

নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসান | ফাইল ছবি 


কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের (২২) সন্ধান ১২ দিনেও মেলেনি। ফায়ার সার্ভিস, পর্যটন পুলিশ, সি-সেফ লাইফগার্ড ও বিচ কর্মীরা প্রতিনিয়ত তল্লাশি চালিয়েও এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি। উদ্ধার তৎপরতায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে।

গত ৭ জুলাই সকাল পৌনে সাতটার দিকে মেরিন ড্রাইভ সড়কের প্যাঁচার দ্বীপ সংলগ্ন হিমছড়ি সৈকতে অরিত্র, কে এম সাদমান রহমান ও আসিফ আহমেদ নামের তিন শিক্ষার্থী গোসলে নামলে স্রোতের টানে তলিয়ে যান। ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর সাদমানের লাশ হিমছড়ি সৈকতেই ভেসে ওঠে। পরদিন ৮ জুলাই সকালে কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক এলাকার শুঁটকিমহাল সৈকতে পাওয়া যায় আসিফের মরদেহ। কিন্তু নিখোঁজ অরিত্রকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অরিত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঢাকায়। বাবা সাকিব হাসান একজন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একাধিক সংস্থা মিলে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে। বিমানবাহিনীর ড্রোনসহ সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি নেই।

বেসরকারি উদ্ধারকারী সংস্থা সি-সেফ লাইফগার্ডের আঞ্চলিক পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গত তিন দশকে সাগরে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয়ে ৭০ জনেরও বেশি পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিন দিনের মধ্যে মরদেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু ১২ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও অরিত্রর সন্ধান না পাওয়া এই প্রথম।

তিনি জানান, সাগর তীর ছাড়াও আশপাশের নদী, মোহনা এবং উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে খোঁজ করা হচ্ছে। গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের কাছেও তথ্য পাঠানো হয়েছে।

নিখোঁজ অরিত্রর বাবা সাকিব হাসান ছেলের সন্ধানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, শুনেছি, সাগর যা নেয়, তা ফেরত দেয়। তাহলে আমার ছেলেকে কেন ফিরিয়ে দিচ্ছে না? আমরা যেকোনো অবস্থায় তাকে ফেরত চাই।

মা জেসমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এই অথই সাগরে আমি আমার ছেলেকে রেখে যেতে পারি না। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্রের কিনারে খুঁজে বেড়াই। একটা মুহূর্তও বাড়িতে থাকতে পারব না, যতক্ষণ না ছেলেকে ফিরে পাই। তল্লাশি অভিযান এখনো অব্যাহত আছে। তবে সময় যত গড়াচ্ছে, পরিবারসহ স্বজনদের আশার প্রদীপ ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

কক্সবাজারে সাগরে নিখোঁজ চবি শিক্ষার্থী অরিত্র: ১২ দিনেও মেলেনি সন্ধান

প্রকাশঃ ০১:১৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসান | ফাইল ছবি 


কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের (২২) সন্ধান ১২ দিনেও মেলেনি। ফায়ার সার্ভিস, পর্যটন পুলিশ, সি-সেফ লাইফগার্ড ও বিচ কর্মীরা প্রতিনিয়ত তল্লাশি চালিয়েও এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি। উদ্ধার তৎপরতায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে।

গত ৭ জুলাই সকাল পৌনে সাতটার দিকে মেরিন ড্রাইভ সড়কের প্যাঁচার দ্বীপ সংলগ্ন হিমছড়ি সৈকতে অরিত্র, কে এম সাদমান রহমান ও আসিফ আহমেদ নামের তিন শিক্ষার্থী গোসলে নামলে স্রোতের টানে তলিয়ে যান। ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর সাদমানের লাশ হিমছড়ি সৈকতেই ভেসে ওঠে। পরদিন ৮ জুলাই সকালে কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক এলাকার শুঁটকিমহাল সৈকতে পাওয়া যায় আসিফের মরদেহ। কিন্তু নিখোঁজ অরিত্রকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অরিত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঢাকায়। বাবা সাকিব হাসান একজন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একাধিক সংস্থা মিলে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে। বিমানবাহিনীর ড্রোনসহ সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি নেই।

বেসরকারি উদ্ধারকারী সংস্থা সি-সেফ লাইফগার্ডের আঞ্চলিক পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গত তিন দশকে সাগরে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয়ে ৭০ জনেরও বেশি পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিন দিনের মধ্যে মরদেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু ১২ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও অরিত্রর সন্ধান না পাওয়া এই প্রথম।

তিনি জানান, সাগর তীর ছাড়াও আশপাশের নদী, মোহনা এবং উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে খোঁজ করা হচ্ছে। গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের কাছেও তথ্য পাঠানো হয়েছে।

নিখোঁজ অরিত্রর বাবা সাকিব হাসান ছেলের সন্ধানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, শুনেছি, সাগর যা নেয়, তা ফেরত দেয়। তাহলে আমার ছেলেকে কেন ফিরিয়ে দিচ্ছে না? আমরা যেকোনো অবস্থায় তাকে ফেরত চাই।

মা জেসমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এই অথই সাগরে আমি আমার ছেলেকে রেখে যেতে পারি না। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্রের কিনারে খুঁজে বেড়াই। একটা মুহূর্তও বাড়িতে থাকতে পারব না, যতক্ষণ না ছেলেকে ফিরে পাই। তল্লাশি অভিযান এখনো অব্যাহত আছে। তবে সময় যত গড়াচ্ছে, পরিবারসহ স্বজনদের আশার প্রদীপ ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”