দীর্ঘ দেড় মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আইন বিভাগের ৩০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম মুন্না। গত রোববার (১৮ মে) সাতক্ষীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুদ্দীনের স্বাক্ষরে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের এক কনফারমেশন প্রতিবেদনের মাধ্যমে মুন্নার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

মুন্নার আইনজীবী, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট ফুয়াদ হাবিব টিটন জানান, জামিনের জন্য প্রথমে শ্যামনগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করা হয়, যা নামঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে দায়রা জজ আদালতেও আবেদন নাকচ হলে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করে মুন্নার মুক্তির নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা পুলিশ সামিউল ইসলাম মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ ছিল, তিনি সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং সরকারি সম্পদের ক্ষতির লক্ষ্যে দেশীয় অস্ত্রসহ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মামলার এজাহারে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে গবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, গ্রেপ্তারের দিন মুন্না বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন এবং এজাহারে উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তার সহপাঠীরা মামলাটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা আখ্যা দিয়ে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

মুক্তির পর প্রতিক্রিয়ায় সামিউল ইসলাম মুন্না বলেন, “আমি আইনের অপপ্রয়োগের শিকার হয়েছি, যা আমার ও আমার পরিবারের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। আমি কখনও ভাবিনি, বিচারহীনতার কারণে আমাকে কারাগারে যেতে হবে। তবে আমার এই কঠিন সময়ে যারা পাশে ছিলেন—শিক্ষক, সহপাঠী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি চাই, কেউ যেন আর আইনের অপপ্রয়োগের শিকার না হয়।”

গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা মুন্নার মুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।