ঢাকা ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবদল নেতা কর্তৃক ব্যবসায়ী হত্যা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল

আমির ফয়সাল । জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০১:২৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • / 3

 ছবি: প্রজন্ম কথা


রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক নেতার হাতে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সারাদেশে চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় ‘সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য’ ব্যানারে বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নতুন ছাত্র হল সংলগ্ন সড়ক, ট্রান্সপোর্ট ও ১০ নম্বর হল এলাকা ঘুরে পুনরায় বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন “যুবদল খুন করে, তারেক রহমান কি করে”, “যুবদল খুন করে, ইন্টেরিম কি করে”, “বিএনপির অনেক গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন”, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস”, “চাঁদা তোলে পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে”, “সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও”, “যে হাত চাঁদা তোলে, সে হাত ভেঙে দাও”, “যুবদলের অনেক গুণ, পাথর দিয়ে মানুষ খুন” ইত্যাদি।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশটি পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য-সচিব আহসান লাবিব। বক্তব্য দেন বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক আনজুম শাহরিয়ার বলেন, এ ঘটনা প্রমাণ করে আমরা আগামী দিনে কেমন শাসক পেতে যাচ্ছি। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। এখনই রুখতে হবে।

ছাত্রশিবির জাবি শাখার প্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক শাফায়েত মীর বলেন, “চাঁদাবাজদের জন্য ভিক্ষা দিতে রাজি আছি, কিন্তু চাঁদাবাজি মেনে নেব না। এসব অন্যায় আমরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবো।”

বিপ্লবী সাংস্কৃতিক মঞ্চের সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “দুইটা রাস্তা খোলা আছে—একটা গোলামী মেনে নেওয়া, আরেকটা রাস্তায় নেমে এই দখলদারদের বিতাড়িত করা। কোনটা বেছে নেবেন, সিদ্ধান্ত আপনাদের।”

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসান ইমাম। তিনি বলেন, “আপনারা যদি নিজেদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে তাদের থাকারই বা প্রয়োজন কী? এমন নৃশংসতা কখনোই কাম্য নয়। এখনো পরিবর্তনের সময় আছে—হত্যাকাণ্ড বন্ধ করুন।”

গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “বিএনপি এখনই রাবন হয়ে গেছে। কথিত দেশনেতা তারেক রহমানের নামেই খুন-চাঁদাবাজি হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন ওঠেছে। মিডিয়া দালালি করলে তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে হবে। এই হত্যার দায় তারেক রহমানকে নিতে হবে।”

সমাবেশের শেষ বক্তা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, এক ফ্যাসিস্টকে বিদায় করেছি, আরেক ফ্যাসিস্টকে বসাতে দেব না। খুন-চাঁদাবাজি, ধর্ষণ আর ত্রাসের রাজত্ব ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। মিডিয়ার পক্ষপাতী ভূমিকা আর বরদাশত করা হবে না। যতদিন জুলাইয়ের চেতনা প্রতিষ্ঠা না হবে, ততদিন লড়াই চলবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

যুবদল নেতা কর্তৃক ব্যবসায়ী হত্যা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশঃ ০১:২৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

 ছবি: প্রজন্ম কথা


রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক নেতার হাতে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সারাদেশে চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় ‘সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য’ ব্যানারে বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নতুন ছাত্র হল সংলগ্ন সড়ক, ট্রান্সপোর্ট ও ১০ নম্বর হল এলাকা ঘুরে পুনরায় বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন “যুবদল খুন করে, তারেক রহমান কি করে”, “যুবদল খুন করে, ইন্টেরিম কি করে”, “বিএনপির অনেক গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন”, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস”, “চাঁদা তোলে পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে”, “সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও”, “যে হাত চাঁদা তোলে, সে হাত ভেঙে দাও”, “যুবদলের অনেক গুণ, পাথর দিয়ে মানুষ খুন” ইত্যাদি।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশটি পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য-সচিব আহসান লাবিব। বক্তব্য দেন বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক আনজুম শাহরিয়ার বলেন, এ ঘটনা প্রমাণ করে আমরা আগামী দিনে কেমন শাসক পেতে যাচ্ছি। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। এখনই রুখতে হবে।

ছাত্রশিবির জাবি শাখার প্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক শাফায়েত মীর বলেন, “চাঁদাবাজদের জন্য ভিক্ষা দিতে রাজি আছি, কিন্তু চাঁদাবাজি মেনে নেব না। এসব অন্যায় আমরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবো।”

বিপ্লবী সাংস্কৃতিক মঞ্চের সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “দুইটা রাস্তা খোলা আছে—একটা গোলামী মেনে নেওয়া, আরেকটা রাস্তায় নেমে এই দখলদারদের বিতাড়িত করা। কোনটা বেছে নেবেন, সিদ্ধান্ত আপনাদের।”

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসান ইমাম। তিনি বলেন, “আপনারা যদি নিজেদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে তাদের থাকারই বা প্রয়োজন কী? এমন নৃশংসতা কখনোই কাম্য নয়। এখনো পরিবর্তনের সময় আছে—হত্যাকাণ্ড বন্ধ করুন।”

গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “বিএনপি এখনই রাবন হয়ে গেছে। কথিত দেশনেতা তারেক রহমানের নামেই খুন-চাঁদাবাজি হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন ওঠেছে। মিডিয়া দালালি করলে তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে হবে। এই হত্যার দায় তারেক রহমানকে নিতে হবে।”

সমাবেশের শেষ বক্তা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, এক ফ্যাসিস্টকে বিদায় করেছি, আরেক ফ্যাসিস্টকে বসাতে দেব না। খুন-চাঁদাবাজি, ধর্ষণ আর ত্রাসের রাজত্ব ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। মিডিয়ার পক্ষপাতী ভূমিকা আর বরদাশত করা হবে না। যতদিন জুলাইয়ের চেতনা প্রতিষ্ঠা না হবে, ততদিন লড়াই চলবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”