অধিকার, মর্যাদা ও ঐক্যের পথে গৃহকর্মী জাতীয় ফোরামের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

- প্রকাশঃ ১১:২৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
- / 1
ঢাকায় গৃহকর্মী জাতীয় ফোরামের জাতীয় সম্মেলন | ছবি: প্রজন্ম কথা
গৃহকর্মীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হয়েছে গৃহকর্মী জাতীয় ফোরাম-বাংলাদেশ (DWNF-BD)–এর জাতীয় সম্মেলন।
দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ও সুনীতি প্রকল্পের সহযোগিতায় আয়োজিত এ সম্মেলনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার গৃহকর্মী নেত্রীবৃন্দ, নীতিনির্ধারক, উন্নয়নকর্মী ও সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন গৃহকর্মী জাতীয় ফোরাম-বাংলাদেশের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা সুলতানা।
গৃহকর্মী জাতীয় ফোরামের জাতীয় সম্মেলন | ছবি: প্রজন্ম কথা
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্টেফানি সেন্ট-লরেন্ট ব্রাসার্ড, সেকেন্ড সেক্রেটারি, হাই কমিশন অব কানাডা, ঢাকা। তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের সঙ্গে থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। আমি আশাবাদী, গৃহকর্মীরা শিগগিরই আইনি স্বীকৃতি পাবে এবং শ্রমিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
আবুল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক, গৃহকর্মী অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক বলেন, প্রথমে বিভাগীয় শহরগুলোতে কাজ শুরু করা উচিত, এখান থেকেই জেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ সম্ভব। আমাদের তিনটি মূল দাবি আইনি অধিকার, সামাজিক সুরক্ষা ও মানবিক মর্যাদা। এই দাবিগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
রোকসানা সুলতানা, নির্বাহী পরিচালক, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স বলেন, আজকের আয়োজন গৃহকর্মীদের আত্মনির্ভরতার প্রতিফলন। নিজেরাই সম্মেলন আয়োজন ও পরিচালনা করছেন এটি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।
শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলেন, অধিকার আদায়ে সংগঠিত আন্দোলন অপরিহার্য। গৃহকর্মীরা এখন নিয়োগকারীর অনুগ্রহ নয়, নিজেদের অধিকার দাবি করছেন এটাই পরিবর্তনের মূল চালিকা শক্তি। শ্রম আইন সংস্কারের মাধ্যমে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্তি এখন সময়ের দাবি।
তারেক আজিজ, কর্মসূচি সমন্বয়ক, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ বলেন, দেশে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোয় এখনো গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অথচ তাদের শ্রম ছাড়া একটি দিনও সমাজ চলতে পারে না। আমাদের জেগে উঠতে হবে, কারণ নারীরা জাগলে দেশও জাগবে।
সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল গত এক বছরের কার্যক্রমের মূল্যায়ন, গৃহকর্মীদের আইনি স্বীকৃতি ও নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সদস্য সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং জেলা পর্যায়ে সংগঠনের কার্যক্রম সম্প্রসারণের কৌশল নির্ধারণ।
এ পর্বে গৃহকর্মী নেত্রী নার্গিস আক্তার (খিলগাঁও), শেফালি আক্তার (বাড্ডা), সোনিয়া আক্তার (মিরপুর) এবং বন্যা রাণী সরকার (মোহাম্মদপুর) বিগত বছরের অর্জন, সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।
আইনি স্বীকৃতি ও নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ে মতামত দেন রাবেয়া আক্তার (কর্মজীবী নারী) এবং শংকর চন্দ্র রায় (ডিএসকে)।
ফোরামের সম্প্রসারণ ও সদস্য সংগ্রহের কৌশল উপস্থাপন করেন উম্মে হামি ও জহিরুল ইসলাম, প্রজেক্ট অফিসার, ডিএসকে।
সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি। সংগঠিত থেকে আমরা গৃহকর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সফল হব।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোমা আক্তার (খিলগাঁও) ও শারমিন আক্তার (মিরপুর)।
সভা শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও মধ্যাহ্নভোজের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের কার্যক্রম সমাপ্ত হয়।