সংঘর্ষের পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস: অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত
- প্রকাশঃ ১০:২৪:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
- / 14
সংঘর্ষের পর পুড়ে যাওয়া যানবাহন ও ভাঙচুর হওয়া ভবন | ছবি: সংগৃহীত
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে রবিবার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ব্যাপক সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাত ১২টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিটি ইউনিভার্সিটিতে। সংঘর্ষে অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসময় সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক ভবন, কম্পিউটার ল্যাবসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় তিনটি বাস ও একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও পাঁচটি যানবাহন। পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে।
সংঘর্ষের পর ভাঙচুর হওয়া ভবন | ছবি: সংগৃহীত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস’ নামে একটি হোস্টেলের সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে থুথু ফেললে তা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়।
পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালান। এতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এরপর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে রাত ১২টার পর ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালান।
সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সংঘর্ষের সময় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সহযোগিতা পাননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় রাতভর আতঙ্কে কাটান তারা।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, “রাতভর চারদিকে আগুন জ্বলছিল। ভবন, যানবাহন, সবকিছু পুড়ে গেছে। আমরা প্রশাসন ও পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাইনি।”
ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সংঘর্ষ কিছুটা থেমে আসে। ততক্ষণে ক্যাম্পাসজুড়ে আগুন, ধ্বংসস্তূপ ও আতঙ্কের ছাপ।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।




























