খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুজীব নিয়মিত খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল এবং ক্রিকেট ক্লাব উভয়েরই সক্রিয় খেলোয়াড়। কিন্তু একটি মাত্র খেলার মাঠ নিয়ে ২৯টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলা টানাপোড়েন তার মতো খেলোয়াড়দের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুজীব বলেন, টুর্নামেন্ট চললে বা অন্য বিভাগের খেলা থাকলে মাঠে অনুশীলন করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। মাঠ পাওয়াটাই ভাগ্যের ব্যাপার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৯টি বিভাগে হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। কিন্তু খেলাধুলার জন্য রয়েছে মাত্র একটি প্রধান মাঠ, যা সব বিভাগের প্রয়োজন মেটাতে সম্পূর্ণ অপ্রতুল। মাঠ ব্যবহারে নির্দিষ্ট রুটেশন বা সুষম সময়সূচি না থাকায় কিছু বিভাগ নিয়মিত সুযোগ পেলেও অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীদের তেমন সুযোগ হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া চর্চা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম বলেন, একটি মাঠ দিয়ে এতগুলো বিভাগের চাহিদা পূরণ করাটা স্বাভাবিকভাবেই কঠিন। আমরা সময় ভাগ করে রুটেশন চালু রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। কিছু বিভাগ ও ক্লাবের খেলোয়াড়রাই বেশি সুযোগ পান।
শুধু ছেলে শিক্ষার্থীরাই নয়, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রীড়া অংশগ্রহণের সুযোগও অত্যন্ত সীমিত। ছাত্রীদের নিজস্ব সময়সূচি বা আলাদা বরাদ্দ না থাকায় মাঠে তাদের উপস্থিতিও অনেক কম।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণাধীন থাকলেও সেটি এখনো চালু হয়নি। ফলে মাঠসংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। এতে ক্রীড়ামুখী শিক্ষার্থীরা যেমন উৎসাহ হারাচ্ছে, তেমনি খেলাধুলায় ভারসাম্যপূর্ণ অংশগ্রহণও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পূর্ণতা কেবল পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। খেলাধুলা, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রেও সমান গুরুত্ব থাকা প্রয়োজন। মাঠের সংকট দীর্ঘায়িত হলে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক বিকাশ ও ক্রীড়ামূলক অর্জন ব্যাহত হতে পারে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন ও রুটেশনভিত্তিক ন্যায্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হোক যাতে প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগে খেলাধুলায় অংশ নিতে পারে।