ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজে অনিয়মের অভিযোগ, তদন্তে নেমেছে প্রশাসন

নড়াইল প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৭:২৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / 2

ছবি: সংগৃহীত

নড়াইল সদর উপজেলার ইচড়বাহায় অবস্থিত নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পর প্রশাসন বিষয়টি তদন্তে মাঠে নেমেছে।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কলেজটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৯ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। শুরু থেকেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন নড়াইল আব্দুল হাই সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার। তিনি একই সঙ্গে সিটি কলেজে কর্মরত থেকে এমপিওভুক্ত কলেজটির প্রশাসনিক কাজ ও ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেছেন, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধিমালার পরিপন্থী।

পরবর্তীতে কলেজ পরিচালনা কমিটির একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র বিশ্বাসকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়, যদিও তার কোনো সরকারি নিয়োগপত্র নেই এবং তিনি ওই পদের জন্য যোগ্যও নন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, কলেজটি একটি বেসরকারি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পদে অবৈধ নিয়োগ এবং স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও বাইরে থেকে শিক্ষার্থী দেখিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগও রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কলেজে চার সেমিস্টারে মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৭ জন।

এছাড়া, কলেজের জরুরি কাগজপত্র ও রেজুলেশন অধ্যাপক সসীম সরকারের বাড়িতে রাখা হয়, সেখান থেকেই কলেজের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফাউন্ডেশনের নামে এমপিওভুক্ত কলেজ পরিচালনার কারণে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো ভবনও নির্মিত হয়নি। এলাকাবাসী দ্রুত ফাউন্ডেশন বাতিল করে কলেজের উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “আমাকে কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমার নিয়োগপত্র নেই। বর্তমানে আমি কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি। ব্যাংক হিসাব এখন আমার নামে।”

অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার বলেন, “আমি ২০০৫ সালে স্থানীয়দের নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। বর্তমানে আমি কোনো প্রশাসনিক দায়িত্বে নেই। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এ নিয়ে মন্তব্য করব না।”

কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভগীরত চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “অধ্যক্ষ না থাকায় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমেশ বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলেজ ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সসীম বাবুর বাড়িতে রাখা হয়।”

এ বিষয়ে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের তলব করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজে অনিয়মের অভিযোগ, তদন্তে নেমেছে প্রশাসন

প্রকাশঃ ০৭:২৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

নড়াইল সদর উপজেলার ইচড়বাহায় অবস্থিত নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পর প্রশাসন বিষয়টি তদন্তে মাঠে নেমেছে।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কলেজটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৯ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। শুরু থেকেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন নড়াইল আব্দুল হাই সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার। তিনি একই সঙ্গে সিটি কলেজে কর্মরত থেকে এমপিওভুক্ত কলেজটির প্রশাসনিক কাজ ও ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেছেন, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধিমালার পরিপন্থী।

পরবর্তীতে কলেজ পরিচালনা কমিটির একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র বিশ্বাসকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়, যদিও তার কোনো সরকারি নিয়োগপত্র নেই এবং তিনি ওই পদের জন্য যোগ্যও নন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, কলেজটি একটি বেসরকারি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পদে অবৈধ নিয়োগ এবং স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও বাইরে থেকে শিক্ষার্থী দেখিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগও রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কলেজে চার সেমিস্টারে মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৭ জন।

এছাড়া, কলেজের জরুরি কাগজপত্র ও রেজুলেশন অধ্যাপক সসীম সরকারের বাড়িতে রাখা হয়, সেখান থেকেই কলেজের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফাউন্ডেশনের নামে এমপিওভুক্ত কলেজ পরিচালনার কারণে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো ভবনও নির্মিত হয়নি। এলাকাবাসী দ্রুত ফাউন্ডেশন বাতিল করে কলেজের উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “আমাকে কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমার নিয়োগপত্র নেই। বর্তমানে আমি কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি। ব্যাংক হিসাব এখন আমার নামে।”

অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার বলেন, “আমি ২০০৫ সালে স্থানীয়দের নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। বর্তমানে আমি কোনো প্রশাসনিক দায়িত্বে নেই। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এ নিয়ে মন্তব্য করব না।”

কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভগীরত চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “অধ্যক্ষ না থাকায় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমেশ বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলেজ ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সসীম বাবুর বাড়িতে রাখা হয়।”

এ বিষয়ে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের তলব করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”