নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই। শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে উপজেলার রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে নবীন যুব সংঘের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম।

ষাঁড়ের লড়াইকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় জমাতে থাকেন। দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কেউ স্কুলের বারান্দা, কেউ বাড়ির ছাদ, আবার কেউ গাছে উঠে লড়াই উপভোগ করেন। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক—সব বয়সী মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

প্রতিযোগিতায় আড়পাড়া, যাদবপুর, শোলপুর, মির্জাপুর, পেড়লীসহ আশপাশের গ্রাম থেকে ৩০টি ষাঁড় অংশ নেয়।

মির্জাপুর থেকে আসা সুবুদ্ধি বিশ্বাস বলেন, “আমাদের গ্রাম থেকে নসিমনে করে ১৫ জন একসঙ্গে এসেছি। ষাঁড়ের লড়াই দেখার আনন্দই আলাদা। যদি বৃষ্টি না হতো, তাহলে মানুষ আরও সুন্দরভাবে এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে পারত।”

আয়োজকদের মতে, ষাঁড়ের লড়াই গ্রামীণ বিনোদনের পাশাপাশি সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। পুরোনো এ ঐতিহ্য ধরে রাখা আগামী প্রজন্মের জন্য জরুরি।

আয়োজক হাসিফ শেখ বলেন, “আগে মেলা, উৎসব ও বিশেষ উপলক্ষে ষাঁড়ের লড়াই হতো। দীর্ঘ ১৫ বছর এই আয়োজন বন্ধ ছিল। এ বছর আবারও আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতে এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিয়মিত আয়োজন করা হবে।”

নবীন যুব সংঘের সভাপতি মো. সায়েবুজ্জামান তোহা বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিপুল দর্শনার্থীর উপস্থিতি প্রমাণ করে, এখনো মানুষ এ ঐতিহ্যের প্রতি আকৃষ্ট।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিগত ১৫ বছরে মানুষের বিনোদনের কোনো সুযোগ ছিল না। আগে জারি গান, নৌকা বাইচ, ঘোড়দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই হতো—কিন্তু তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে। আমরা সেই গ্রামীণ ঐতিহ্যগুলো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজন ঘিরে রঘুনাথপুরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। দর্শনার্থীদের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে, ষাঁড়ের লড়াই এখনো গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রাণবন্ত অংশ।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”