সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন ‘শাহ আরেফিন (র.) ও অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতু’র কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সাত বছর আগে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হলেও এখনো সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
সোমবার (৯ জুন) বেলা ১১টায় তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি গ্রামের পাশের সেতুর পশ্চিম পাড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে আশপাশের ঘাগটিয়া, গড়কাটি, সুন্দর পাহাড়ি, জালর টেক, মানিগাঁও আদর্শ গ্রাম, জামবাগ, বাদাঘাট, মোল্লা পাড়া ও কামড়াবন্দ গ্রামের শত শত মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যাদুকাটা সেতু এই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের প্রকল্প, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে উন্নয়ন, যোগাযোগ এবং পর্যটনের অগ্রগতির প্রত্যাশা। তারা বলেন, “সেতুটি সম্পন্ন হলে লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত যেমন সহজ হবে, তেমনি টিলা, শিমুল বাগান, নীলাদ্রি লেক ও টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে আগত পর্যটকরাও উপকৃত হবেন।”
ঘাগটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার রায় মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, “সেতুর কাজ দ্রুত শুরু না হলে আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেব এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।”
২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল যাদুকাটা নদীর ওপর ৭৫০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ব্যয় নির্ধারিত হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তমা কনস্ট্রাকশন চার দফায় সময় নিলেও এখনো প্রকল্পের ২৫ শতাংশ কাজ বাকি। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ৬৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার বেশি বিল উত্তোলন করেছে, যা অনুমোদিত ব্যয়ের তুলনায় এক কোটি টাকার বেশি।
সেতুর ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ১২টির কাজ এবং ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে ৬০টির কাজ সম্পন্ন হলেও গত এক বছর ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এখনও বাকি রয়েছে ২০টি গার্ডার ও ৩টি স্প্যানের কাজ।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা, লেখক ও সমাজকর্মী আবুল হোসেন, গণকল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সারোয়ার হাসান, সমাজকর্মী মাওলানা দেলোয়ার, শিক্ষক পল্টু রায়, সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক ও আবির হাসান মানিক, চিকিৎসাসেবা ফাউন্ডেশনের নাজমুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মোহাম্মদ নুর উদ্দিন এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদ।
তারা বলেন, এতদিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় আমাদের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু না হলে যাদুকাটা নদীর দুই তীরের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বে। উন্নয়নের স্বপ্নও থমকে যাবে।
