সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তৎকালীন জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসেমসহ পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গায়েবি ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে ভুক্তভোগী বিএনপি নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচি পালন করেন।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পরিকল্পিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার হুকুমদাতা হিসেবে তারা সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, তৎকালীন ওসি আবুল হাসেম, মামলার বাদী এএসআই তারিকুল ইসলাম, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুল্লাহ আখন্দ এবং মামলার কথিত সাক্ষীদের দায়ী করেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আইনজীবী এডভোকেট শাহিনুর রহমান বলেন, মিথ্যা মামলা একটি মানবতা-বিরোধী অপরাধ। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এখন আমাদের দাবি এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
বিএনপি নেতা আবুল কালাম বলেন, আমাদের একমাত্র অপরাধ আমরা বিএনপি করি। এই অপরাধের জন্য আমরা বছরের পর বছর ধরে হামলা-মামলার শিকার হচ্ছি।”
আব্দুল আখের নামের একজন ভুক্তভোগী জানান, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর আমাদের স্থানীয় কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে অনেকেই গুরুতর আহত হন। এরপর মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমাদের হয়রানি করা হয়।
প্রতিবন্ধী তেরাই মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি ভিক্ষা করে খাই। কোনো সন্তান নেই। শুধুমাত্র বিএনপি করি বলে মারামারির মামলায় আমাকে আসামি করা হয়। এর চেয়ে বড় অন্যায় আর কী হতে পারে!
বক্তারা বলেন, এসব হয়রানিমূলক মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে এখন তারা আইনি প্রক্রিয়ায় ক্ষতিপূরণ এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করছেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেন এমন গায়েবি মামলায় আর কাউকে ফাঁসানো না হয়, সে লক্ষ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আরাফাত উল্লাহ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ভীমখালী ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি ও ৯নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য সাইফুল ইসলাম।
এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন ভীমখালী ইউনিয়ন বিএনপির ৯নং ওয়ার্ড কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেন, যুবদল নেতা আজিজুর রহমান, সাবেক মেম্বার ও বিএনপি নেতা হোসাইন আহমেদ এবং অন্যান্য স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
