ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের আবেগঘন সমাবেশ

তুর্য দাস। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৮:৩২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
  • / 1

সুনামগঞ্জে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী ও আবেগঘন অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৯৭২ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত হওয়া সন্তানদের মায়েদের সম্মান জানাতে এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতেই এই আয়োজন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এবং সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিরোদা রানী রায়। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাকির হোসাইন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় শহীদ সন্তানদের স্মৃতিচারণভিত্তিক একটি তথ্যচিত্র। চলচিত্রটির দৃশ্যপট দেখতে দেখতে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকের চোখে জল চলে আসে। এরপর শুরু হয় মায়েদের সরাসরি বক্তব্য পর্ব—যেখানে উঠে আসে সন্তান হারানোর দগদগে স্মৃতি, সংগ্রামী জীবনের নানা অধ্যায় এবং শোকের পাশাপাশি গর্বের মুহূর্তগুলো।

আহত সন্তান জাকারিয়ার মা কুলসুমা বেগম বলেন, “জুলাইয়ের সেই রক্তাক্ত দুপুরে আমার ছেলের শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। তবু আমি গর্ব করি—আমার সন্তান এই দেশের জন্য লড়েছে।”
রিপন মিয়ার মা আছর বিবি, রহমত আলীর মা পারভীন আক্তার, সুহান মিয়ার মা মোছা. জুলেহা, কানিজ সুলতানাসহ আরও অনেক মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সন্তানের কথা বলেন। তাদের ভাষায় উঠে আসে—একদিকে গভীর বেদনার সুর, অন্যদিকে দেশের প্রতি ভালোবাসার অকুণ্ঠ অভিব্যক্তি।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “জুলাইয়ের মায়েরা আমাদের জাতির বিবেক। তাদের এই আত্মত্যাগ আমরা চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব। প্রশাসন সর্বদা তাদের পাশে থাকবে।” তিনি আরও জানান, এসব শহীদ পরিবারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সহায়তা আরও জোরদার করা হবে।

অনুষ্ঠানটি শেষ হয় সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে। উপস্থিত সকলে একবাক্যে বলেন—এমন আয়োজন আরও হওয়া উচিত, যেন আগামী প্রজন্মও জানে আমাদের স্বাধীনতার মূল্য কতটা রক্তে লেখা।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

সুনামগঞ্জে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের আবেগঘন সমাবেশ

প্রকাশঃ ০৮:৩২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

সুনামগঞ্জে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী ও আবেগঘন অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৯৭২ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত হওয়া সন্তানদের মায়েদের সম্মান জানাতে এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতেই এই আয়োজন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এবং সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিরোদা রানী রায়। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাকির হোসাইন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় শহীদ সন্তানদের স্মৃতিচারণভিত্তিক একটি তথ্যচিত্র। চলচিত্রটির দৃশ্যপট দেখতে দেখতে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকের চোখে জল চলে আসে। এরপর শুরু হয় মায়েদের সরাসরি বক্তব্য পর্ব—যেখানে উঠে আসে সন্তান হারানোর দগদগে স্মৃতি, সংগ্রামী জীবনের নানা অধ্যায় এবং শোকের পাশাপাশি গর্বের মুহূর্তগুলো।

আহত সন্তান জাকারিয়ার মা কুলসুমা বেগম বলেন, “জুলাইয়ের সেই রক্তাক্ত দুপুরে আমার ছেলের শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। তবু আমি গর্ব করি—আমার সন্তান এই দেশের জন্য লড়েছে।”
রিপন মিয়ার মা আছর বিবি, রহমত আলীর মা পারভীন আক্তার, সুহান মিয়ার মা মোছা. জুলেহা, কানিজ সুলতানাসহ আরও অনেক মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সন্তানের কথা বলেন। তাদের ভাষায় উঠে আসে—একদিকে গভীর বেদনার সুর, অন্যদিকে দেশের প্রতি ভালোবাসার অকুণ্ঠ অভিব্যক্তি।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “জুলাইয়ের মায়েরা আমাদের জাতির বিবেক। তাদের এই আত্মত্যাগ আমরা চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব। প্রশাসন সর্বদা তাদের পাশে থাকবে।” তিনি আরও জানান, এসব শহীদ পরিবারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সহায়তা আরও জোরদার করা হবে।

অনুষ্ঠানটি শেষ হয় সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে। উপস্থিত সকলে একবাক্যে বলেন—এমন আয়োজন আরও হওয়া উচিত, যেন আগামী প্রজন্মও জানে আমাদের স্বাধীনতার মূল্য কতটা রক্তে লেখা।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”