ঢাকা ০৯:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোলাগঞ্জে লুটের পাথরের স্তুপ: তদন্তে নেমেছে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ০৮:৫৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / 2

অবৈধভাবে উত্তোলন করা পাথর নৌকা ও ট্রাক্টরে সরিয়ে নিতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কালাইরাগ এলাকায় | ছবি: ইউসুফ আলী


সিলেটের ভোলাগঞ্জ ও ধলাই নদী এলাকার পথে পথে এখন ছড়িয়ে–ছিটিয়ে সাদা পাথরের স্তুপ। নদী থেকে লুট হওয়া এসব পাথরের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ক্রেতারা পাথর কিনেছেন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। যারা বিক্রি করতে পারেননি, তারা চরে কিংবা ক্রাশার কারখানার আঙিনায় পাথর মজুত রেখেছেন।

গতকাল বুধবার ভোলাগঞ্জ ও ধলাই নদীর আশপাশ ঘুরে দেখা গেছে কালাইরাগ, দয়ারবাজার ও কালাসাদেকসহ অন্তত ৩০টি স্থানে পাথরের স্তুপ। পাড়ুয়া এলাকার প্রমি, তুহিন, লাকি, হেপি, ইমরান ও ডিজিটাল স্টোন ক্রাশার মিল এবং সিলেট সদরের আমিন, মাইশা ও সিলেট স্টোন ক্রাশার মিলেও মজুত রয়েছে সাদা পাথর। যদিও মালিকরা দাবি করেছেন, এসব ভোলাগঞ্জের নয়।

পাথর লুটের ঘটনায় সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী রোববারের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুদক সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের একটি দল গতকাল ভোলাগঞ্জ পরিদর্শন করে পাথর লুটের নেপথ্যের হোতাদের শনাক্তে কাজ শুরু করেছে।

নদী থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও অনেককে দেখা গেছে আগের লুটের পাথর সরিয়ে নিতে। জেলা প্রশাসনের অভিযানে কালাইরাগ এলাকায় ১২ হাজার ফুট পাথর জব্দ ও এক ট্রাক্টরসহ কিছু যন্ত্রপাতি ধ্বংস করা হয়। তবে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহমুদ আশিক কবির কোনো মন্তব্য করেননি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করে অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। বক্তারা বলেন, দুষ্কৃতকারীরা শুধু পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে না, বরং স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটনকেন্দ্রকেও বিপন্ন করছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েস ও মৌলভীবাজারে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। গ্রিন ভয়েসের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “প্রকৃতি চুরি চলবে না, চোরের ক্ষমা হবে না” এবং “সাদা পাথরে কালো হাত”।

২০১৭ সালে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র দেশব্যাপী পরিচিতি পায়। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচ্ছিন্নভাবে পাথর লুট চলছিল। সম্প্রতি ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসার পর প্রশাসন, দুদক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সক্রিয় হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

ভোলাগঞ্জে লুটের পাথরের স্তুপ: তদন্তে নেমেছে প্রশাসন

প্রকাশঃ ০৮:৫৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

অবৈধভাবে উত্তোলন করা পাথর নৌকা ও ট্রাক্টরে সরিয়ে নিতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কালাইরাগ এলাকায় | ছবি: ইউসুফ আলী


সিলেটের ভোলাগঞ্জ ও ধলাই নদী এলাকার পথে পথে এখন ছড়িয়ে–ছিটিয়ে সাদা পাথরের স্তুপ। নদী থেকে লুট হওয়া এসব পাথরের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ক্রেতারা পাথর কিনেছেন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। যারা বিক্রি করতে পারেননি, তারা চরে কিংবা ক্রাশার কারখানার আঙিনায় পাথর মজুত রেখেছেন।

গতকাল বুধবার ভোলাগঞ্জ ও ধলাই নদীর আশপাশ ঘুরে দেখা গেছে কালাইরাগ, দয়ারবাজার ও কালাসাদেকসহ অন্তত ৩০টি স্থানে পাথরের স্তুপ। পাড়ুয়া এলাকার প্রমি, তুহিন, লাকি, হেপি, ইমরান ও ডিজিটাল স্টোন ক্রাশার মিল এবং সিলেট সদরের আমিন, মাইশা ও সিলেট স্টোন ক্রাশার মিলেও মজুত রয়েছে সাদা পাথর। যদিও মালিকরা দাবি করেছেন, এসব ভোলাগঞ্জের নয়।

পাথর লুটের ঘটনায় সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী রোববারের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুদক সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের একটি দল গতকাল ভোলাগঞ্জ পরিদর্শন করে পাথর লুটের নেপথ্যের হোতাদের শনাক্তে কাজ শুরু করেছে।

নদী থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও অনেককে দেখা গেছে আগের লুটের পাথর সরিয়ে নিতে। জেলা প্রশাসনের অভিযানে কালাইরাগ এলাকায় ১২ হাজার ফুট পাথর জব্দ ও এক ট্রাক্টরসহ কিছু যন্ত্রপাতি ধ্বংস করা হয়। তবে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহমুদ আশিক কবির কোনো মন্তব্য করেননি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করে অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। বক্তারা বলেন, দুষ্কৃতকারীরা শুধু পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে না, বরং স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটনকেন্দ্রকেও বিপন্ন করছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েস ও মৌলভীবাজারে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। গ্রিন ভয়েসের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “প্রকৃতি চুরি চলবে না, চোরের ক্ষমা হবে না” এবং “সাদা পাথরে কালো হাত”।

২০১৭ সালে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র দেশব্যাপী পরিচিতি পায়। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচ্ছিন্নভাবে পাথর লুট চলছিল। সম্প্রতি ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসার পর প্রশাসন, দুদক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সক্রিয় হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”