ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাওর ও পরিবেশ রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় চাই

তুর্য দাস | সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৩:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 10

সুনামগঞ্জে পরিবেশবাদীদের স্লোগান: হাওর বাঁচাও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ো | ছবি: প্রজন্ম কথা


‘হাওর ভরাট ও পরিবেশের ক্ষতি করে নয়’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠন যৌথভাবে মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “আমরা চাই সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক, সেজন্য আমরাও স্বেচ্ছাশ্রম দিতে প্রস্তুত। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রস্তাবিত স্থান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। হাওর ভরাট করে ক্যাম্পাস হলে তা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।”

আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দির সভাপতিত্বে ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈয়বুর রহমান বাবুল, পরিবেশবাদী সংগঠন ‘হাউস’-এর নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম-সিলেটের সভাপতি আবুল হোসেন, হাওর-নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান রাসেল প্রমুখ।

এছাড়া মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা আহ্বায়ক ও যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্য ইমনুদ্দোজা আহমদ, জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইজাজুল হক চৌধুরী নাছিমসহ আরও অনেকে।

বক্তারা জানান, সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস মৌজার ১২৫ একর জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এটি দেখার হাওরের অংশ, যেখানে অসংখ্য খাল, বিল, নদী ও জলমহাল মিলিয়ে সমৃদ্ধ জলজ বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে। প্রস্তাবিত জায়গার দুই পাশ দিয়ে থাকা আহসান মারা ও জয়কলস ব্রিজের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে কালনী নদীতে মিশে। এখানে স্থায়ী ক্যাম্পাস হলে পানিপ্রবাহ ব্যাহত হয়ে হাওরের কৃষিজমি ও জলাশয়ের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইন পাস হয় ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর। ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। প্রথম ব্যাচে ভর্তি হয় ১২৮ এবং দ্বিতীয় ব্যাচে ভর্তি হয় ১৪৩ জন শিক্ষার্থী। বর্তমানে ১৭ জন শিক্ষক ও ২৭ জন কর্মচারী নিয়ে কার্যক্রম চলছে। জেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, একটি মাদ্রাসা, একটি কলেজসহ ভাড়া করা ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

হাওর ও পরিবেশ রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় চাই

প্রকাশঃ ০৩:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সুনামগঞ্জে পরিবেশবাদীদের স্লোগান: হাওর বাঁচাও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ো | ছবি: প্রজন্ম কথা


‘হাওর ভরাট ও পরিবেশের ক্ষতি করে নয়’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠন যৌথভাবে মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “আমরা চাই সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক, সেজন্য আমরাও স্বেচ্ছাশ্রম দিতে প্রস্তুত। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রস্তাবিত স্থান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। হাওর ভরাট করে ক্যাম্পাস হলে তা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।”

আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দির সভাপতিত্বে ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈয়বুর রহমান বাবুল, পরিবেশবাদী সংগঠন ‘হাউস’-এর নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম-সিলেটের সভাপতি আবুল হোসেন, হাওর-নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান রাসেল প্রমুখ।

এছাড়া মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা আহ্বায়ক ও যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্য ইমনুদ্দোজা আহমদ, জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইজাজুল হক চৌধুরী নাছিমসহ আরও অনেকে।

বক্তারা জানান, সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস মৌজার ১২৫ একর জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এটি দেখার হাওরের অংশ, যেখানে অসংখ্য খাল, বিল, নদী ও জলমহাল মিলিয়ে সমৃদ্ধ জলজ বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে। প্রস্তাবিত জায়গার দুই পাশ দিয়ে থাকা আহসান মারা ও জয়কলস ব্রিজের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে কালনী নদীতে মিশে। এখানে স্থায়ী ক্যাম্পাস হলে পানিপ্রবাহ ব্যাহত হয়ে হাওরের কৃষিজমি ও জলাশয়ের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইন পাস হয় ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর। ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। প্রথম ব্যাচে ভর্তি হয় ১২৮ এবং দ্বিতীয় ব্যাচে ভর্তি হয় ১৪৩ জন শিক্ষার্থী। বর্তমানে ১৭ জন শিক্ষক ও ২৭ জন কর্মচারী নিয়ে কার্যক্রম চলছে। জেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, একটি মাদ্রাসা, একটি কলেজসহ ভাড়া করা ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”