ঢাকা ১২:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশ থেকে এলেন বাবা- ছেলের নিথর দেহ দেখতে

  • প্রকাশঃ ০২:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 40

শান্তশিষ্ট, ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। কিন্তু শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় রাজধানীতে নিজ ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে নির্মমভাবে প্রাণ হারান তিনি। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেছে তার পরিবার, স্বজন, সহপাঠী এবং গোটা এলাকা।

নিহতের মরদেহ যখন ময়মনসিংহের ভালুকার কাইচান গ্রামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে, তখন গোটা গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। চারদিকে শুধু কান্নার রোল। বুকফাটা আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। নিহত পারভেজের প্রবাসী বাবা জসিম উদ্দিন ছেলের নিথর দেহ একবার চোখের দেখা দেখতে কুয়েত থেকে ছুটে আসেন। ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, আট বছর ধরে সন্তানদের জন্য প্রবাসে কষ্ট করছি। আজ ছেলের লাশ দেখতে দেশে ফিরলাম। যাদের হাতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ফাঁসি চাই। ভিডিও ফুটেজে সব প্রমাণ আছে, তাও এখনো তারা ধরা পড়েনি কেন?

পারভেজের মা পারভিন আক্তার বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছেন না। পারভেজের মামা সবুজ জানান, “আমার ভাগিনাকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহতের মরদেহ কাইচান পাঠকবাড়ী ঈদগাহ মাঠে একটি ফ্রিজার এ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়েছে। শত শত মানুষ তার লাশ একনজর দেখার জন্য ভিড় করছেন। জানা গেছে, রোববার (২০ এপ্রিল) রাত ৯টায় জানাজা শেষে পারভেজের দাফন পারিবারিক গোরস্থানে সম্পন্ন হবে।

শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক প্রতিনিধি ও সহপাঠীরা বিকেলে পারভেজের বাড়িতে পৌঁছান। এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পারভেজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিএনপি, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশ নেন।

নিহত পারভেজের গ্রামের প্রতিবেশী প্রজন্ম কথাকে জানান, পারভেজ ছিল ভদ্র, নম্র ও সবার প্রিয়। এমন একজন ছেলেকে এভাবে হারানো আমাদের জন্য গভীর বেদনার।

পারভেজের এই অকাল মৃত্যুতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবাই একবাক্যে বলছেন- এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছেন তার পরিবার, সহপাঠী ও শুভানুধ্যায়ী সবাই।

শেয়ার করুন

বিদেশ থেকে এলেন বাবা- ছেলের নিথর দেহ দেখতে

প্রকাশঃ ০২:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

শান্তশিষ্ট, ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। কিন্তু শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় রাজধানীতে নিজ ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে নির্মমভাবে প্রাণ হারান তিনি। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেছে তার পরিবার, স্বজন, সহপাঠী এবং গোটা এলাকা।

নিহতের মরদেহ যখন ময়মনসিংহের ভালুকার কাইচান গ্রামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে, তখন গোটা গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। চারদিকে শুধু কান্নার রোল। বুকফাটা আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। নিহত পারভেজের প্রবাসী বাবা জসিম উদ্দিন ছেলের নিথর দেহ একবার চোখের দেখা দেখতে কুয়েত থেকে ছুটে আসেন। ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, আট বছর ধরে সন্তানদের জন্য প্রবাসে কষ্ট করছি। আজ ছেলের লাশ দেখতে দেশে ফিরলাম। যাদের হাতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ফাঁসি চাই। ভিডিও ফুটেজে সব প্রমাণ আছে, তাও এখনো তারা ধরা পড়েনি কেন?

পারভেজের মা পারভিন আক্তার বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছেন না। পারভেজের মামা সবুজ জানান, “আমার ভাগিনাকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহতের মরদেহ কাইচান পাঠকবাড়ী ঈদগাহ মাঠে একটি ফ্রিজার এ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়েছে। শত শত মানুষ তার লাশ একনজর দেখার জন্য ভিড় করছেন। জানা গেছে, রোববার (২০ এপ্রিল) রাত ৯টায় জানাজা শেষে পারভেজের দাফন পারিবারিক গোরস্থানে সম্পন্ন হবে।

শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক প্রতিনিধি ও সহপাঠীরা বিকেলে পারভেজের বাড়িতে পৌঁছান। এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পারভেজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিএনপি, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশ নেন।

নিহত পারভেজের গ্রামের প্রতিবেশী প্রজন্ম কথাকে জানান, পারভেজ ছিল ভদ্র, নম্র ও সবার প্রিয়। এমন একজন ছেলেকে এভাবে হারানো আমাদের জন্য গভীর বেদনার।

পারভেজের এই অকাল মৃত্যুতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবাই একবাক্যে বলছেন- এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছেন তার পরিবার, সহপাঠী ও শুভানুধ্যায়ী সবাই।