চুরির অভিযোগে যুবলীগ কর্মীকে বেঁধে মারধর: থানায় নেই কোনো অভিযোগ

অপরাধ সিলেট বিভাগ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় চুরির অভিযোগে পিলারের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে যুবলীগের এক কর্মীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির নাম ইছা মিয়া (৩৫), যিনি তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের সাধেরখলা গ্রামের বাসিন্দা।

ঘটনাটি ঘটে গত ৩১ মে রাতে। স্থানীয় হাজী এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের একটি দোকানে চুরির পরদিন, ১ জুন রোববার, গ্রামবাসী সন্দেহভাজন হিসেবে ইছা মিয়াকে ধরে এনে একটি ঘরের পিলারে বেঁধে মারধর করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কিছু চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারও করা হয়।

এই ঘটনার একটি ভিডিও ৩ জুন সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

ইছা মিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই চুরির অভিযোগ ছিল বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। পার্শ্ববর্তী আমতৈল গ্রামের বাসিন্দা নুর আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “সে এমন কোনো মসজিদ নাই যেটা সে চুরি করেনি। আমার বাড়ি থেকেও সে টাকা আর গয়না নিয়েছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য রোপন মিয়া বলেন, “আমরা বহুদিন ধরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে আসছিলাম। এবার হাতেনাতে ধরা পড়ার পর সে নিজেই চুরি স্বীকার করে, এবং মালামাল উদ্ধার হয়। এরপর তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

ইছা মিয়ার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও এলাকায় আলোচনা শুরু হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন মিয়া বলেন, “ইছা মিয়া আমাদের সংগঠনের কেউ না। হ্যাঁ, সে যুবলীগ সমর্থক হতে পারে, তবে কোনো দায়িত্বে নেই। জীবিকার জন্য মোটরসাইকেল চালিয়ে ভাড়ায় যাত্রী নেয়।”

তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “চুরির অভিযোগ থাকলেও কাউকে ধরে এনে মারধর করা আইনবহির্ভূত। আমরা এখনও এই বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরও পুলিশ বা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা না থাকায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, আইন প্রয়োগে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ না থাকলে এই ধরনের ‘গণবিচার’ ও ‘নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার’ প্রবণতা বাড়বে।

প্রতিবেদক: আসিফ মাহবুব