ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ: সাংবাদিকদের মারধর

- প্রকাশঃ ০১:২৪:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
- / 1
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে দুই শিক্ষার্থী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনজন সাংবাদিক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড় ও পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের শাস্তি ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সদস্য ও দৈনিক শিক্ষা-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আরিফ বিল্লাহ, রিপোর্টার্স ইউনিটির কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক আজকালের খবর-এর প্রতিনিধি রবিউল আলম এবং বার্তা২৪-এর প্রতিনিধি নূর-ই আলম।
আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বনাম ২০২২-২৩ সেশনের ফুটবল খেলা চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। আমি খবর সংগ্রহের জন্য ভিডিও করতে গেলে ২০২০-২১ বর্ষের আফসানা পারভীন টীনা আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। মোবাইল ফেরত চাইতে গেলে নাহিদ হাসান, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, পান্না, অজিল, সাইফুল, মশিউর রহমান, হৃদয়সহ ৮-১০ জন আমাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে।’
তিনি আরও জানান, ‘তারা এখনো আমার মোবাইল ফেরত দেয়নি। পেশাগত কাজে বাধা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবি করছি।’
সাংবাদিক নূর-ই আলম বলেন, ‘আমি প্রতিদিনের মতো মাঠে খেলতে গিয়েছিলাম। মারামারির খবর পেয়ে আরিফের ভিডিও করতে গেলে আমাকেও ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী কিল-ঘুষি, লাথি মেরে আঘাত করে। অর্থনীতি বিভাগের মিনহাজ, অজিল, সাইফুল, মশিউর রহমান, হৃদয়সহ অন্যরা এ হামলায় জড়িত।’
সাংবাদিক রবিউল আলম বলেন, ‘মারামারির খবর শুনে গেলে দেখি আরিফকে ঘিরে রাখা হয়েছে। ভিডিও করতে গেলে আমার মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কয়েকজন। বাধা দিলে নাহিদ হাসান তলপেটে লাথি মেরে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। এর আগেও সংবাদ প্রকাশের জেরে আমাকে হুমকি দিয়েছিল সে।’
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘হট্টগোল শুনে সামনে গিয়ে দেখি একজন সাংবাদিককে কয়েকজন মিলে মারছে। আরেকজন সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে তাকেও মারধর করে।’
ঘটনাস্থলে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট, রোভার খন্দকার সায়েম ও ডিবিসি প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন জানান, তাদের সামনেই আরিফ ও রবিউলকে মারধর করা হয়। পরে তারা সবাই মিলে আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন।
অভিযুক্ত অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান প্রথমে মারধরের কথা অস্বীকার করলেও পরে বলেন, ‘আমার গলা ধরছে, তখন আমি কী করব?’ এরপর তিনি প্রতিবেদকের ফোন কেটে দেন। মোবাইল কেড়ে নেওয়া শিক্ষার্থী আফসানা পারভীন টীনাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি ড. পার্থ সারথি লস্কর বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। কীভাবে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এ ঘটনায় সাংবাদিকরা দ্রুত দোষীদের শাস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।