ঢাকা ০২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিয়াদের নেতৃত্বে, সাবেক এমপি আজাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৫ কোটি টাকার চেক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ০৯:০০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / 3

আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ | ছবি: সংগৃহীত


আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক এমপির কাছে থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের বিরুদ্ধে। রাজধানীর গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেফতারের আগে রিয়াদ ও তার সহযোগীরা প্রায় ৫ কোটি টাকার একটি চেক আদায় করেন সাবেক এমপি আব্দুল কালাম আজাদের কাছ থেকে—এমন তথ্য উঠে এসেছে পুলিশি তদন্তে।

পুলিশ ও আজাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় রিয়াদের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেকের উৎসও ওই সাবেক এমপি। তিনি নবম জাতীয় সংসদে রংপুর-৬ আসনের এমপি ছিলেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এমপি আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, গত ২৬ জুন রিয়াদের নেতৃত্বে ১০–১২ জনের একটি দল আমার অফিসে ঢুকে বলে আপনি নিজে থানায় যাবেন, না আমরা নিয়ে যাব? তারপর তারা বলে টাকা দেবেন, না বাইরে যে ২০০ লোক আছে তাদের জুতার বাড়ি, চড়-থাপ্পড় খাবেন?

আজাদ জানান, সে সময় তার কাছে নগদ টাকা না থাকায় মোবাইল ফোন ও প্রায় ৫ কোটি টাকার কয়েকটি চেক নিয়ে যায় রিয়াদের দল। তবে তার মোবাইল ফোনটি পরে ফেরত দেওয়া হয়।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, রিয়াদের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া চেকগুলোর পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যার সঙ্গে আজাদের অভিযোগ মিলেছে।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, রিয়াদ ও তার সহযোগীরা আর কার কার কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছে—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এর আগে, ২৬ জুলাই গুলশান এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে কলাবাগান থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

শাম্মীর স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর মামলায় বলেন, ১৭ জুলাই অভিযুক্তরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয়ে বাসায় এসে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি প্রথমে ১০ লাখ টাকা দিই। ১৯ ও ২৬ জুলাই তারা ফের আসে বাকি টাকা চাইতে। শেষবারে আমি পুলিশ ডাকি এবং পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেফতারের পর রিয়াদসহ অভিযুক্ত চারজনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রিমান্ডে থাকা অন্য তিনজন হলেন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেন মুন্না (২৪), সদস্য সাকাদাউন সিয়াম (২২) ও সাদাব (২১)।

পুলিশ জানায়, এ চক্রের বিরুদ্ধে আরও ভুক্তভোগীদের খোঁজে তদন্ত চলছে। এছাড়া পালিয়ে থাকা আরেক অভিযুক্ত কাজী গৌরবের খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

রিয়াদের নেতৃত্বে, সাবেক এমপি আজাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৫ কোটি টাকার চেক

প্রকাশঃ ০৯:০০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ | ছবি: সংগৃহীত


আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক এমপির কাছে থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের বিরুদ্ধে। রাজধানীর গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেফতারের আগে রিয়াদ ও তার সহযোগীরা প্রায় ৫ কোটি টাকার একটি চেক আদায় করেন সাবেক এমপি আব্দুল কালাম আজাদের কাছ থেকে—এমন তথ্য উঠে এসেছে পুলিশি তদন্তে।

পুলিশ ও আজাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় রিয়াদের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেকের উৎসও ওই সাবেক এমপি। তিনি নবম জাতীয় সংসদে রংপুর-৬ আসনের এমপি ছিলেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এমপি আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, গত ২৬ জুন রিয়াদের নেতৃত্বে ১০–১২ জনের একটি দল আমার অফিসে ঢুকে বলে আপনি নিজে থানায় যাবেন, না আমরা নিয়ে যাব? তারপর তারা বলে টাকা দেবেন, না বাইরে যে ২০০ লোক আছে তাদের জুতার বাড়ি, চড়-থাপ্পড় খাবেন?

আজাদ জানান, সে সময় তার কাছে নগদ টাকা না থাকায় মোবাইল ফোন ও প্রায় ৫ কোটি টাকার কয়েকটি চেক নিয়ে যায় রিয়াদের দল। তবে তার মোবাইল ফোনটি পরে ফেরত দেওয়া হয়।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, রিয়াদের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া চেকগুলোর পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যার সঙ্গে আজাদের অভিযোগ মিলেছে।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, রিয়াদ ও তার সহযোগীরা আর কার কার কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছে—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এর আগে, ২৬ জুলাই গুলশান এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে কলাবাগান থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

শাম্মীর স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর মামলায় বলেন, ১৭ জুলাই অভিযুক্তরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয়ে বাসায় এসে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি প্রথমে ১০ লাখ টাকা দিই। ১৯ ও ২৬ জুলাই তারা ফের আসে বাকি টাকা চাইতে। শেষবারে আমি পুলিশ ডাকি এবং পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেফতারের পর রিয়াদসহ অভিযুক্ত চারজনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রিমান্ডে থাকা অন্য তিনজন হলেন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেন মুন্না (২৪), সদস্য সাকাদাউন সিয়াম (২২) ও সাদাব (২১)।

পুলিশ জানায়, এ চক্রের বিরুদ্ধে আরও ভুক্তভোগীদের খোঁজে তদন্ত চলছে। এছাড়া পালিয়ে থাকা আরেক অভিযুক্ত কাজী গৌরবের খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”