ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হত্যা: প্রেম ও ত্রিমুখী সম্পর্কের জের, ছাত্রী ও তার প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৪

ইমতিয়াজ উদ্দিন । জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৯:০২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 1

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার ছাত্রী বর্ষা ও বর্ষার প্রেমিক মাহির রহমান। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তারা এই হত্যাকাণ্ড কার্যকরের ছক কষতে শুরু করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম দৈনিক সমকালকে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার সকালে ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এটি বর্ষা ও মাহিরের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্ষার সঙ্গে মাহিরের দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এর মাঝে বর্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। এ কারণে তিনি মাহিরকে প্রত্যাখ্যান করে জোবায়েদকে পছন্দ করার কথা জানান। তবে কিছুদিন পর বর্ষা পুনরায় তার প্রেমিক মাহিরকে জানান যে, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। এরপরেই বর্ষা ও মাহির মিলে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বর্ষা হত্যা পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করলেও পরে মাহির ও বর্ষাকে মুখোমুখি করা হলে সে সত্যতা স্বীকার করে। জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, সেই পরিকল্পনা তারা গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই করে আসছিল।’ হত্যাকাণ্ডের দিন মাহিরের সঙ্গে তার আরও দুই বন্ধু ছিল। খুনের জন্য তারা নতুন দুটি সুইচ গিয়ার (ছোরা) কিনেছিল। মাহির এলোপাতাড়ি ছুরি চালায় এবং বর্ষার প্ররোচনাতেই মাহির জোবায়েদকে হত্যা করে বলে জানান তিনি।

জোবায়েদ হোসাইন জবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

প্রায় এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলার ১৫, নুরবক্স লেনের রৌশান ভিলা নামের বাড়িতে বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের বিষয়ে পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

গত রোববার (তারিখ উল্লেখ নেই, তবে সংবাদে ‘রোববার’ বলা হয়েছে) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবায়েদ বর্ষার বাসার তিন তলায় ওঠার সময় সিঁড়িতে নির্মমভাবে খুন হন। বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্তের দাগ ছিল। তিন তলার সিঁড়িতে তাকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে এবং মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হত্যা: প্রেম ও ত্রিমুখী সম্পর্কের জের, ছাত্রী ও তার প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশঃ ০৯:০২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার ছাত্রী বর্ষা ও বর্ষার প্রেমিক মাহির রহমান। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তারা এই হত্যাকাণ্ড কার্যকরের ছক কষতে শুরু করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম দৈনিক সমকালকে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার সকালে ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এটি বর্ষা ও মাহিরের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্ষার সঙ্গে মাহিরের দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এর মাঝে বর্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। এ কারণে তিনি মাহিরকে প্রত্যাখ্যান করে জোবায়েদকে পছন্দ করার কথা জানান। তবে কিছুদিন পর বর্ষা পুনরায় তার প্রেমিক মাহিরকে জানান যে, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। এরপরেই বর্ষা ও মাহির মিলে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বর্ষা হত্যা পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করলেও পরে মাহির ও বর্ষাকে মুখোমুখি করা হলে সে সত্যতা স্বীকার করে। জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, সেই পরিকল্পনা তারা গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই করে আসছিল।’ হত্যাকাণ্ডের দিন মাহিরের সঙ্গে তার আরও দুই বন্ধু ছিল। খুনের জন্য তারা নতুন দুটি সুইচ গিয়ার (ছোরা) কিনেছিল। মাহির এলোপাতাড়ি ছুরি চালায় এবং বর্ষার প্ররোচনাতেই মাহির জোবায়েদকে হত্যা করে বলে জানান তিনি।

জোবায়েদ হোসাইন জবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

প্রায় এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলার ১৫, নুরবক্স লেনের রৌশান ভিলা নামের বাড়িতে বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের বিষয়ে পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

গত রোববার (তারিখ উল্লেখ নেই, তবে সংবাদে ‘রোববার’ বলা হয়েছে) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবায়েদ বর্ষার বাসার তিন তলায় ওঠার সময় সিঁড়িতে নির্মমভাবে খুন হন। বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্তের দাগ ছিল। তিন তলার সিঁড়িতে তাকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে এবং মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”