ঢাকা ০৭:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী অপহরণ: ইউপিডিএফকে দায়

  • প্রকাশঃ ০৩:৩৯:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / 33

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে বিজু উৎসব শেষে ফেরার পথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার জন্য পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)-কে দায়ী করা হলেও সংগঠনটি জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


অপহৃতরা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তারা হলেন

  • রিশান চাকমা (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ)

  • মৈত্রীময় চাকমা (চারুকলা বিভাগ)

  • অলড্রিন ত্রিপুরা (চারুকলা বিভাগ)

  • দিব্যি চাকমা (নাট্যকলা বিভাগ)

  • লংঙি ম্রো (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ)

তাদের সঙ্গে থাকা টমটম চালকও অপহৃত হয়েছেন, তবে তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি।


পুলিশ সূত্র জানায়, বিজু উৎসব শেষে শিক্ষার্থীরা খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রামে ফেরার পরিকল্পনা করেন। তবে বাসের টিকিট না পাওয়ায় তারা কুকিছড়া এলাকায় মৈত্রীময় চাকমার আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হলে গিরিফুল এলাকায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা লোকজন তাদের জোরপূর্বক গাড়ি থেকে নামিয়ে অপহরণ করে।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, “আমরা মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহৃতদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।”


পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা জানিয়েছেন, ঘটনার পেছনে ইউপিডিএফ (প্রসীত)-এর হাত রয়েছে। এটি পরিকল্পিত অপহরণ। শিক্ষার্থীরা কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত ছিল না।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ-এর খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, এই অপহরণের ঘটনায় আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা বরাবরই ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত ও প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরোধিতা করে এসেছি। কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাদের বদনাম দিতে চাইছে।

ঘটনার পর পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপহৃতদের উদ্ধার করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাহাড়ি এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে এবং সম্ভাব্য সন্দেহভাজনদের নজরদারিতে রেখেছে।

এই ঘটনার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল দ্রুত অপহৃতদের নিরাপদে উদ্ধার এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী অপহরণ: ইউপিডিএফকে দায়

প্রকাশঃ ০৩:৩৯:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে বিজু উৎসব শেষে ফেরার পথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার জন্য পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)-কে দায়ী করা হলেও সংগঠনটি জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


অপহৃতরা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তারা হলেন

  • রিশান চাকমা (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ)

  • মৈত্রীময় চাকমা (চারুকলা বিভাগ)

  • অলড্রিন ত্রিপুরা (চারুকলা বিভাগ)

  • দিব্যি চাকমা (নাট্যকলা বিভাগ)

  • লংঙি ম্রো (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ)

তাদের সঙ্গে থাকা টমটম চালকও অপহৃত হয়েছেন, তবে তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি।


পুলিশ সূত্র জানায়, বিজু উৎসব শেষে শিক্ষার্থীরা খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রামে ফেরার পরিকল্পনা করেন। তবে বাসের টিকিট না পাওয়ায় তারা কুকিছড়া এলাকায় মৈত্রীময় চাকমার আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হলে গিরিফুল এলাকায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা লোকজন তাদের জোরপূর্বক গাড়ি থেকে নামিয়ে অপহরণ করে।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, “আমরা মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহৃতদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।”


পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা জানিয়েছেন, ঘটনার পেছনে ইউপিডিএফ (প্রসীত)-এর হাত রয়েছে। এটি পরিকল্পিত অপহরণ। শিক্ষার্থীরা কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত ছিল না।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ-এর খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, এই অপহরণের ঘটনায় আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা বরাবরই ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত ও প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরোধিতা করে এসেছি। কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাদের বদনাম দিতে চাইছে।

ঘটনার পর পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপহৃতদের উদ্ধার করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাহাড়ি এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে এবং সম্ভাব্য সন্দেহভাজনদের নজরদারিতে রেখেছে।

এই ঘটনার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল দ্রুত অপহৃতদের নিরাপদে উদ্ধার এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।