কোরআনের অনুবাদ পাঠে মেধার স্বীকৃতি—জাবিতে পুরস্কার বিতরণ

- প্রকাশঃ ০২:৩৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
- / 19
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কুরআন অ্যান্ড কালচারাল স্টাডি ক্লাব আয়োজিত “৫ম কুরআনের পাঠ অনুবাদ প্রতিযোগিতা”–এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোরআনের ভাব ও মর্ম অনুধাবনের লক্ষ্যে আয়োজিত এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ মে) বেলা ২টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সেমিনার কক্ষে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি সাইফুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রব, ক্লাবের (ফিমেইল সেকশন) উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক শামিমা নাসরিন জলি, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল বাক্বী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
প্রধান আলোচক মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা অন্যের পরিবর্তনের কথা বলি, সমাজ ও রাষ্ট্র বদলাতে চাই। কিন্তু নিজেদের পরিবর্তনের উদ্যোগ নেই। কোরআনই সেই আলোকবর্তিকা, যা আত্মশুদ্ধির পথ দেখায়। ব্যক্তিজীবনকে আলোকিত করতে কোরআনের জ্ঞান অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, সূরা ইউসুফ এবং সূরা ক্বা’ফে জীবনের জটিল সমস্যার সমাধান রয়েছে। দাজ্জালের ফিতনা থেকে হেফাজতের জন্য প্রতি জুমায় সূরা ক্বা’ফ পাঠের অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল বাক্বী বলেন, যারা নিষিদ্ধতা থেকে নিজেকে রক্ষা করে, তারাই প্রকৃত পবিত্রতায় পৌঁছে। কোরআন অর্থসহ পাঠ করলে জীবনের প্রকৃত সংজ্ঞা ও উদ্দেশ্য অনুধাবন করা যায়।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রব বলেন, মুসলিম হিসেবে কোরআনের জ্ঞান অর্জন করা অপরিহার্য। শুধুমাত্র তেলাওয়াত নয়, বুঝে আমল করাই এর মূল লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে ক্লাবের (ফিমেইল সেকশন) উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক শামিমা নাসরিন জলি বলেন, আমাদের চরিত্র এমন হওয়া উচিত, যেন মানুষ আমাদের দেখে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। পর্দা বা বাহ্যিক চিহ্ন যথেষ্ট নয়—ব্যক্তিত্ব ও আচরণেই ইসলামের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ পায়।
তিনি আরও বলেন, রমাদানে আমরা অনেক খতম দেই, কিন্তু তার শিক্ষাগুলো বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হয় না। কোরআনের ভাষা, ব্যাকরণ ও তাৎপর্য বুঝে গ্রহণ করলেই কেবল তার মাধুর্য হৃদয় ছুঁয়ে যেতে পারে।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষা-সংস্কৃতির পাশাপাশি ইসলামি মূল্যবোধ চর্চায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে কোরআনের অনুবাদ পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী মোট ৫০ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কোরআনের জ্ঞানকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার এই প্রয়াস অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও উপস্থিত অতিথিদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি করে।