ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী কলেজে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালিত, উপেক্ষিত শহীদ পরিবার

মোঃ আসিফ হোসেন । রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৬:৩১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • / 2

রাজশাহী কলেজে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও উপেক্ষিত থেকেছেন শহীদদের পরিবারবর্গ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৬ জুলাই) কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে “জুলাই পুনর্জাগরণ” শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। সরকারি নির্দেশনার অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও এই দিবসটি পালন করা হয়। তবে অনুষ্ঠান আয়োজনের সময় শহীদ পরিবারের কাউকে আমন্ত্রণ না জানানোয় সমালোচনার মুখে পড়ে কলেজ প্রশাসন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাজশাহী কলেজের ছাত্র রায়হান আলী শহীদ হন। তাঁর পরিবারের কাউকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া রাজশাহীতে নিহত শহীদ সাকিব আঞ্জুমের পরিবারের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ হয়নি বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন,

  • শহীদ পরিবারবর্গই তাঁদের আত্মত্যাগের জীবন্ত সাক্ষী। তাঁদের ছাড়া শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এটি প্রশাসনের চরম অবিবেচনা ও অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।

ছাত্রশিবিরের কলেজ শাখার সেক্রেটারি মো. মোশারফ হোসেন বলেন,

  • যেহেতু রাজশাহীতে দুইজন শহীদ আছেন, তাঁদের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানালে অনুষ্ঠানটি পূর্ণতা পেত। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে শহীদ রায়হান আলীর পরিবারের প্রতি কলেজ প্রশাসন এমন অবজ্ঞা দেখিয়েছে।

এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,

  • কলেজ প্রশাসন গত কয়েক বছর ধরে ২৪-ইস্যুতে বিতর্কিত ভূমিকা রেখে আসছে। শহীদের নামে ভবনের নামকরণে ভুল, রাজনৈতিক পক্ষপাত, নিষিদ্ধ সংগঠনের বার্তা প্রচারসহ নানা ঘটনায় তারা বিতর্কে জড়িয়েছে। এসব প্রশ্নের কোনো জবাব মেলেনি।

এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্মসূচির সভাপতি প্রফেসর মো. যহুর আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে শহীদ রায়হান আলীর বাবা মো. মুসলেম উদ্দীন জানান,

  • রাজশাহী কলেজের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে ছিলাম। কলেজে দোয়া মাহফিল হয়েছে জানলে অবশ্যই উপস্থিত হতাম।

অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে এমন উপেক্ষার ঘটনায় কলেজ প্রশাসনের প্রতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ভবিষ্যতে শহীদ পরিবারের সম্মান ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

রাজশাহী কলেজে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালিত, উপেক্ষিত শহীদ পরিবার

প্রকাশঃ ০৬:৩১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

রাজশাহী কলেজে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও উপেক্ষিত থেকেছেন শহীদদের পরিবারবর্গ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৬ জুলাই) কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে “জুলাই পুনর্জাগরণ” শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। সরকারি নির্দেশনার অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও এই দিবসটি পালন করা হয়। তবে অনুষ্ঠান আয়োজনের সময় শহীদ পরিবারের কাউকে আমন্ত্রণ না জানানোয় সমালোচনার মুখে পড়ে কলেজ প্রশাসন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাজশাহী কলেজের ছাত্র রায়হান আলী শহীদ হন। তাঁর পরিবারের কাউকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া রাজশাহীতে নিহত শহীদ সাকিব আঞ্জুমের পরিবারের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ হয়নি বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন,

  • শহীদ পরিবারবর্গই তাঁদের আত্মত্যাগের জীবন্ত সাক্ষী। তাঁদের ছাড়া শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এটি প্রশাসনের চরম অবিবেচনা ও অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।

ছাত্রশিবিরের কলেজ শাখার সেক্রেটারি মো. মোশারফ হোসেন বলেন,

  • যেহেতু রাজশাহীতে দুইজন শহীদ আছেন, তাঁদের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানালে অনুষ্ঠানটি পূর্ণতা পেত। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে শহীদ রায়হান আলীর পরিবারের প্রতি কলেজ প্রশাসন এমন অবজ্ঞা দেখিয়েছে।

এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,

  • কলেজ প্রশাসন গত কয়েক বছর ধরে ২৪-ইস্যুতে বিতর্কিত ভূমিকা রেখে আসছে। শহীদের নামে ভবনের নামকরণে ভুল, রাজনৈতিক পক্ষপাত, নিষিদ্ধ সংগঠনের বার্তা প্রচারসহ নানা ঘটনায় তারা বিতর্কে জড়িয়েছে। এসব প্রশ্নের কোনো জবাব মেলেনি।

এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্মসূচির সভাপতি প্রফেসর মো. যহুর আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে শহীদ রায়হান আলীর বাবা মো. মুসলেম উদ্দীন জানান,

  • রাজশাহী কলেজের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে ছিলাম। কলেজে দোয়া মাহফিল হয়েছে জানলে অবশ্যই উপস্থিত হতাম।

অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে এমন উপেক্ষার ঘটনায় কলেজ প্রশাসনের প্রতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ভবিষ্যতে শহীদ পরিবারের সম্মান ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”