ঢাকা ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীদের তথ্য সচেতনতা গঠনে পাঠ্যপুস্তকে ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ অন্তর্ভুক্তির সময় এসেছে

রাকিবুল হাসান মুন্না । ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ১০:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
  • / 4

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। দৈনন্দিন তথ্যপ্রবাহ, মতামত, অভিব্যক্তি এমনকি খবরও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এই সুবিশাল ডিজিটাল জগতে যেমন ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিভ্রান্তিকর তথ্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ভয়াবহ ছায়াও।

বিশেষ করে misinformation (ভুল তথ্য), disinformation (ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য), malinformation (প্রাসঙ্গিক তথ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন) এবং hate speech (বিদ্বেষপূর্ণ ভাষা) ইন্টারনেটে নিয়মিতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর দ্রুত অগ্রগতির ফলে তৈরি হচ্ছে ভুয়া ছবি, ভিডিও ও সংবাদ—যা সত্য-মিথ্যার ব্যবধানকে আরও ঘোলাটে করে তুলছে।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন তথ্য যাচাই বা ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা। বিশেষত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে ফ্যাক্ট চেকিং অন্তর্ভুক্ত করা গেলে শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই তথ্য যাচাইয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবে। ফলে তারা কেবল নিজেরাই গুজব বা মিথ্যা তথ্য থেকে সুরক্ষিত থাকবে না, বরং সমাজেও সচেতনতার বীজ বপন করতে পারবে।

একটি মিথ্যা তথ্য কখনো ব্যক্তির মানহানি ঘটাতে পারে, কখনো সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি তা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। ফলে তথ্য পাওয়ার পর যাচাই না করে তা শেয়ার করাটা হতে পারে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।

এই সংকট সমাধানে সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকসহ সচেতন নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। পাঠ্যপুস্তকে ফ্যাক্ট চেকিং শেখানোর পাশাপাশি শিক্ষকদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত করা প্রয়োজন।

আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতের নাগরিক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। যদি তারা তথ্যের ভেতরের সত্যকে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা নিয়ে গড়ে ওঠে, তবে সমাজ হবে আরও সুস্থ, যুক্তিনির্ভর এবং সহনশীল। প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা এবং তথ্য যাচাইয়ের অভ্যাস তাদের করে তুলবে একজন দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিক।

তাই এখনই সময় শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য সচেতনতা ও ফ্যাক্ট চেকিং-কে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার। ইন্টারনেট যেন শিক্ষার হাতিয়ার হয়, বিভ্রান্তির নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

শিক্ষার্থীদের তথ্য সচেতনতা গঠনে পাঠ্যপুস্তকে ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ অন্তর্ভুক্তির সময় এসেছে

প্রকাশঃ ১০:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। দৈনন্দিন তথ্যপ্রবাহ, মতামত, অভিব্যক্তি এমনকি খবরও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এই সুবিশাল ডিজিটাল জগতে যেমন ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিভ্রান্তিকর তথ্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ভয়াবহ ছায়াও।

বিশেষ করে misinformation (ভুল তথ্য), disinformation (ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য), malinformation (প্রাসঙ্গিক তথ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন) এবং hate speech (বিদ্বেষপূর্ণ ভাষা) ইন্টারনেটে নিয়মিতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর দ্রুত অগ্রগতির ফলে তৈরি হচ্ছে ভুয়া ছবি, ভিডিও ও সংবাদ—যা সত্য-মিথ্যার ব্যবধানকে আরও ঘোলাটে করে তুলছে।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন তথ্য যাচাই বা ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা। বিশেষত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে ফ্যাক্ট চেকিং অন্তর্ভুক্ত করা গেলে শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই তথ্য যাচাইয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবে। ফলে তারা কেবল নিজেরাই গুজব বা মিথ্যা তথ্য থেকে সুরক্ষিত থাকবে না, বরং সমাজেও সচেতনতার বীজ বপন করতে পারবে।

একটি মিথ্যা তথ্য কখনো ব্যক্তির মানহানি ঘটাতে পারে, কখনো সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি তা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। ফলে তথ্য পাওয়ার পর যাচাই না করে তা শেয়ার করাটা হতে পারে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।

এই সংকট সমাধানে সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকসহ সচেতন নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। পাঠ্যপুস্তকে ফ্যাক্ট চেকিং শেখানোর পাশাপাশি শিক্ষকদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত করা প্রয়োজন।

আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতের নাগরিক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। যদি তারা তথ্যের ভেতরের সত্যকে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা নিয়ে গড়ে ওঠে, তবে সমাজ হবে আরও সুস্থ, যুক্তিনির্ভর এবং সহনশীল। প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা এবং তথ্য যাচাইয়ের অভ্যাস তাদের করে তুলবে একজন দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিক।

তাই এখনই সময় শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য সচেতনতা ও ফ্যাক্ট চেকিং-কে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার। ইন্টারনেট যেন শিক্ষার হাতিয়ার হয়, বিভ্রান্তির নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”